দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে সফল অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন হল। মিশন হাসপাতালের হেমাটো-অঙ্কোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এই অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করতে সফল হয়েছেন। ফলে এবার এই হাসপাতালেই লিউকোমিয়া, লিম্ফোমা ও মায়েলোমা চিকিৎসার এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল। হেমাটোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. দিব্যেন্দু দে এবং ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. শুভ্র শঙ্খ দত্তের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সফল অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়। কলকাতার বাইরে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম হাসপাতাল হল মিশন হাসপাতাল যেখানে অস্থিমজ্জা সফল প্রতিস্থাপন সম্ভব হল বলে দাবি মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
মিশন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত এক রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কেমোথেরাপি ও অন্যান্য অত্যাধুনিক চিকিৎসায় রোগীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা আয়ত্তে আনার পর গত ২১ জুলাই সফল অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়। এর পর ১ আগস্ট রোগীর শরীরে পুনরায় ক্যান্সার মুক্ত রক্তকোষ উৎপাদন শুরু হওয়া দেখে সফল অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন হয়েছে বলে নিশ্চিত হন মিশন হাসপাতালের হেমাটো-অঙ্কোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে দুর্গাপুরের পলাশ ডিহার বাসিন্দা রোয়ান্ডে মারান্ডি গত সাত মাস আগে কোমরে ব্যাথা ও দু’পায়ে প্যারালিসিস নিয়ে মিশন হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ওই মহিলার শরীরে মারণ রোগ বাসা বেঁধেছে বলে নিশ্চিত হন। মিশন হাসপাতালের হেমাটো-অঙ্কোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের টিম তখনই দীর্ঘ চিকিৎসার সঙ্গে রোগীর ঝুঁকিপূর্ণ অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের সিধান্ত নেন। গত ৭ মাসে রোগীকে ৪ সাইকেল কেমোথেরাপি দেওয়ার পর রোগীর শরীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এর জন্য বিশেষ সেবা শুশ্রুষা সহকারে একটি স্বতন্ত্র জীবাণুমুক্ত স্পেশাল ট্রান্সপ্লান্ট রুমে রোগীকে একমাস রাখা হয়।
বুধবার মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ চিকিৎসার পর রোগীকে প্রকাশ্যে নিয়ে এলে রোগী রোয়ান্ডে মারান্ডির মুখে হাসি ফোটে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে দীর্ঘ সাত মাসের চিকিৎসা সহ এই অসাধ্য সাধন করতে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। অত্যাধুনিক সুচিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে এবার থেকে মিশন হাসপাতাল ক্যান্সার চিকিৎসারও অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিগণিত হল।