সিন্ডিকেটের বাধায় দুর্গাপুরের সগরভাঙায় এফসিআইয়ের গুদাম থেকে রেশনের জন্যে গম তুলতে পারল না পূর্ব বর্ধমানের প্রায় ৫২টি ট্রাক। পূর্ব বর্ধমান এম আর ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশন শনিবার দুপুরে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় ও খাদ্য দফতরকে লিখিতভাবে স্থানীয় ট্রাক-মালিকদের সিন্ডিকেটের বাধায় এফসিআইয়ের গুদাম পর্যন্ত ট্রাকগুলি যেতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছে। দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় ট্রাক সিন্ডিকেটের দুই নেতা সুব্রত দত্ত ও তপন গড়াইয়ের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পূর্ব বর্ধমান এম আর ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক কিরণশঙ্কর মণ্ডল।
এম আর ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক আব্দুল মালেকের অভিযোগ, এফসিআইয়ের গুদামে ৬৩টি ট্রাক দাঁড়িয়েছিল। ডিস্ট্রিবিউটরদের ওই ট্রাকে করেই গম নিয়ে যাওয়ার জন্যে বাধ্য করা হচ্ছিল। বাধা পেয়ে পূর্ব বর্ধমানের ৫২টি ট্রাক ফিরে চলে এসেছে। অহেতুক গাড়ির ভাড়া গুণতে হল। এই পরিস্থিতি হলে ওই গুদাম থেকে কোনও ট্রাক সামগ্রী তুলতে যাবে না। বিষয়টি সব স্তরেই জানানো হয়েছে। ওই সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, এক-একটি ট্রাকে ১২০ কুইন্টাল গম থাকে। পূর্ব বর্ধমান থেকে প্রতি মাসে ২৫০টির মতো ট্রাক দুর্গাপুরের এফসিআই গুদামে যায়।
এ দিন দুর্গাপুরে আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত ভট্টাচার্য, মন্ত্রী মলয় ঘটক, রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। সেখানে এম আর ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ধরণের অভিযোগ যাতে না আসে, তা নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা তথা দুর্গাপুরের বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশন ও খাদ্য দফতর থেকে বিষয়টি জানার পরেই যথাযথ জায়গায় আলোচনা হয়েছে। প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।’
পূর্ব বর্ধমানের এম আর ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক কিরণশঙ্কর মণ্ডল জেলা খাদ্য নিয়ামক (পূর্ব বর্ধমান)-কে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ‘শনিবার দুর্গাপুরের এফসিআই গুদাম থেকে গম তুলতে গিয়ে তাঁদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। ট্রাক-সিন্ডিকেটের নেতারা গুদামের প্রবেশ পথেই জোর করে আমাদের ট্রাকগুলিকে আটকে দেয়। রেশনের গম তুলতে গেলে ওই সিন্ডিকেটের ট্রাক নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। আমাদের ভাড়া করা ট্রাকের তুলনায় প্রতি কুইন্টাল গমের জন্যে সিন্ডিকেটের ট্রাকের ভাড়া ৪০ টাকা বেশি লাগবে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।’ জেলার খাদ্য নিয়ামক অসীম নন্দী বলেন, ‘বিষয়টি দেখার জন্যে পশ্চিম বর্ধমানের খাদ্য নিয়ামককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দফতরের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।’
