এ যেন এক উলট পুরাণ! করোনা আবহে শহরের নামিদামি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলি যখন বার্ষিক এবং মাসিক ‘ফি’ কমাতে নারাজ এবং তার জেরে অভিভাবকরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন। ঠিক তখনই এই শহরেরই একটি বেসরকারি বাংলা মাধ্যম উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল স্বেচ্ছায় কমিয়ে দিল স্কুল ফি-এর বাড়তি বোঝা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের নামি বেসরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল, সুরেনচন্দ্র মডার্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল ফি কমানোর দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন। স্কুলের এহেন মানবিক সিদ্ধান্তে অভিভাবকেরা খুশি। ফি কমানোর প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষক ড. সুশীল ভট্টাচার্য বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানে আদর্শবান মানুষ তৈরির কারখানা। যে মানুষ হবে আগামী দিনের সমাজের দর্পণ। যার নীতি, আদর্শ, বিবেক কাজ করবে বিচার বিবেচনা করার সময়।’
বেসরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল সুরেনচন্দ্র মডার্ন স্কুলের ব্যতিক্রমী প্রয়াস নিয়ে স্কুলের সম্পাদক সুশান্ত পোদ্দার জানান, বাস্তববাদী হওয়াটা সময়ের উপযোগী বলে মনে করি। বর্তমান সময়ে অনেক অভিভাবক কর্মচ্যুত হয়েছেন। মানুষ অনেক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তার উপর পড়ুয়াদের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোটা অভিভাবকদের কাছে অর্থনৈতিক ভাবে একটি বাড়তি চাপ। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিভাবকরা যতটা চিন্তিত, ঠিক ততটাই চিন্তিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর সেই বার্তা দিতেই লকডাউন ঘোষণার পর প্রথম চার মাস পঞ্চাশ শতাংশ ‘ফি’ নেওয়া হয়েছিল। এবং পরবর্তী সময় আগস্ট মাস থেকে কেবলমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হচ্ছে। এতে মুখে হাসি ফুটেছে ভুক্তভোগী অভিভাবকদের। এবং পশ্চিমবঙ্গের বুকে বেসরকারি স্কুল হিসেবে স্কুল ফি কমিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করল দুর্গাপুরের সুরেনচন্দ্র মডার্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই বেসরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে বিক্ষোভ আন্দোলনের পরিবর্তে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি।