ভেড়ার মতো দেখতে কিন্তু ভেড়া নয়। সারা শরীর চর্বিযুক্ত মোটা লেজওয়ালা এক ধরনের বিশেষ প্রাণী একে দুম্বা বলে। ছাগলের মতো সব খাবার খায় দুম্বা। এর মাংস খুব সুস্বাদু। স্বাভাবিক ভাবেই এর বাজারে চাহিদা তুঙ্গে। চড়া দামে বিক্রি হয় দুম্বার মাংস। এই প্রাণীর আদি বাস মরুদেশ গুলিতে। কিন্তু বাজারে এর চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যাবসার জন্য এখন আর মরুদেশ গুলির উপর নির্ভর করতে হয়না। এখানেও এখন দুম্বার প্রতিপালন হচ্ছে। দুর্গাপুরের ফরিদপুর ব্লকের লাউদোহায় দুম্বার খামার তৈরি করে দুম্বার প্রতিপালন করা হচ্ছে। দুর্গাপুরের নঈম নগরের বাসিন্দা মহম্মদ তাসলিম দুম্বার খামার গড়ে তুলেছেন ইচ্ছাপুর এলাকায়। দুম্বা প্রতিপালন করে তাসলিমবাবু বাণিজ্যিক ভাবে সফল। তাঁর দাবি, মরুভূমির দেশের দুম্বা’র জন্য ইতিমধ্যেই বাংলার আবহাওয়া অনুকূল হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি দুম্বার চাহিদা রাজ্য সহ বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফাও ভালো হচ্ছে। এর ওজন বৃদ্ধিতে দাম নির্ধারণ হয়। কুইন্টাল প্রতি এক থেকে দুই লাখ টাকা দাম হয়।
২০১৯ সালে ইচ্ছাপুর এলাকায় একটি ছাগলের খামার তৈরি করেন তসলিমবাবু। রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব সহ হরিয়ানার নানান প্রজাতির ছাগল ও ভেড়া প্রতিপালন শুরু হয় এই খামারে। ছাগল ভেড়ার পাশাপাশি হরিয়ানা থেকে বেশকয়েকটি দুম্বা’র শাবক তিনি নিয়ে আসেন তাঁর খামারে। দুম্বাগুলি এখানকার জলবায়ুতে খাপ খাইয়ে নেয়। পরে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বংশ বিস্তারও শুরু হয়ে যায়। দেড় বছরের মধ্যে এক একটি দুম্বার এক কুইন্ট্যালের অধিক ওজন বৃদ্ধি হতে থাকে। তাসলিমবাবু বলেন, ‘দুম্বা মূলত তুর্কি’র ভেড়ার প্রজাতি। সৌদিআরব থেকে এই দেশে দুম্বা এসেছে। রাজস্থান ও হরিয়ানা সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রতিপালিত হয় এই দুম্বা। পশ্চিমবঙ্গের কোথাও চাষ হয় না সম্ভবত। তসলিমের দাবি তিনিই প্রথম পশ্চিম বর্ধমান জেলায় দুম্বা প্রতিপালন করছেন। ছাগলের মাংস থেকে দুম্বার মাংস অনেক বেশি সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও রয়েছে। যেহেতু চড়া দাম তাই স্থানীয় বাজারে দুম্বার মাংস বিক্রি হয়না। কুরবানির সময় কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বিক্রি হয়। বাংলাদেশেও রপ্তানি করা হয়।