দিন দিন ফুলে যাচ্ছিল পেট। সঙ্গে সিভিয়ার অ্যানিমিয়া, থাইরয়েড ও খাবারে অনীহা। এই সমস্ত উপসর্গ নিয়েই উখড়ার বছর পঞ্চাশের মহিলা মরানি রুইদাস ভর্তি হন দুর্গাপুরের মলানদিঘির সনাকা হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানতে পারেন, ফুলে যাওয়া পেট ছাড়াও গত কয়েক মাস ধরে ওই রোগী গুরুতর অ্যানিমিয়ায় ভুগছিলেন। তাঁকে নিয়মিত রক্তও দিতে হচ্ছিল। সঙ্গে ছিল থাইরয়েড ও খাবার প্রতি অনীহা।

পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন ওই রোগীর প্লীহার আকার অস্বাভাবিক রকম বড়। প্লীহা বড় হওয়ার ফলে দেহে তৈরি হওয়া রক্তের কণিকাগুলি ভেঙে যায়। এমনকি বাইরে থেকে যে রক্ত শরীরে দেওয়া হয় তার কণাও দ্রুত ভেঙে যায়। প্লীহা যত বাড়বে ততই দ্রুত রক্তের প্রয়োজন হবে রোগীর দেহে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা সম্ভব হলে প্লীহা কেটে বাদ দিয়ে দেন। এই অস্ত্রোপচারকে বলা হয় ‘স্প্লিনেকটমি’।

মরানি রুইদাসের ক্ষেত্রেও সনাকা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখেন স্প্লিনেকটমি ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু রোগীর যেরকম শারিরীক অবস্থা তাতে এই অস্ত্রোপচার যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ রোগী থাইরয়েড এবং সিভিয়ার অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত। এই জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালের বিশষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। ওই টিমে ছিলেন ডা. পিকে সিং, ডা. রাজীব রঞ্জন ও ডা. কেপি হাঁসদা।

শনিবার তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সনাকা হাসপাতালে ওই রোগীর অস্ত্রোপচার হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের টিম সফলভাবে অস্ত্রোপচার করে বিশালাকার প্লীহাটি কেটে বাদ দিতে সমর্থ হন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্রোপচারের পর রোগীর আবস্থা স্থিতিশীল হলেও তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকদের সফল অস্ত্রোপচারের পর রোগীর পরিজনেরা তাঁদের খুশির কথা বলেন এবং চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।

Like Us On Facebook