তীব্র দাবদাহে নাজেহাল অবস্থা পশুপাখিদের। কাঁকসার দেউলের জঙ্গলের হরিণ ও ময়ূরদের রক্ষা করতে বনদফতর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে৷ সকাল থেকেই গরমের জেরে নাজেহাল হরিণ ও ময়ূরদের ওআরএস ও গ্লুকোজ খাওয়ানো হচ্ছে। এছাড়াও তাদের শরীরের জলশূন্যতা রুখতে ও সুস্থ রাখতে খাওয়ানো হচ্ছে টাটকা শাকসবজি, আখের গুড়, ভেজানো ছোলা, বিটনুন ও ভূষি। পাশাপাশি তাদের ওপর সারাক্ষণ বনদফতরের কর্মীরা নজরদারি চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে দুর্গাপুর বনদপ্তর সূত্রে।
বনদফতর সূত্রে খবর, ১৯৯২ সালে গৌরাঙ্গপুর গ্রামের দেউলের জঙ্গলে হরিণ ও ময়ূরের জন্য সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়, যা বনদফতরের শিবপুর বিট অফিসের আওতাধীনে। সেখানকার বিট অফিসার অনুপ কুমার মন্ডল সহ প্রায় ১৮ জন বনকর্মী হরিণ ও ময়ূরের দেখভাল করেন। বর্তমানে সেখানে মোট ৯৬ টি চিতল হরিণ রয়েছে। যার মধ্যে ৭ টি হরিণের শাবকও রয়েছে। এছাড়াও ময়ূরের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। পশু চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তাদের ওআরএস ও গ্লুকোজ খাওয়ার জলে মেশানো হচ্ছে। এছাড়াও ভেজানো ছোলা ও আখের গুড় খাওয়ানো হচ্ছে। গাজর সহ টাটকা শাকসবজি ও গাছের কচি পাতা সংগ্রহ করে দেওয়া হচ্ছে।
বন দফতরের দুর্গাপুর রেঞ্জ অফিসার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এপ্রিলের শুরু থেকেই যে হারে দাবদাহ বেড়ে চলেছে তাতে সংরক্ষিত এলাকার হরিণ ও ময়ূরগুলিকে সুস্থ রাখতে তারা ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। প্রতিদিন প্রায় ২০ প্যাকেট ওআরএস দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গ্লুকোজ থেকে গুড়, ছোলা, শাকসবজিও দেওয়া হচ্ছে। পশু চিকিৎসকের পরামর্শ মত আগামী মে ও জুন মাস পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে দেওয়া হবে। যাতে এই তীব্র তাপপ্রবাহে তারা অসুস্থ না হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জঙ্গলে গাছের পাতা ও ঘাস তেমন ভাবে এখনও গজিয়ে উঠতে পারেনি। গাছের কচি পাতা সংগ্রহ করে হরিণ গুলিকে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ময়ূরকে গম দেওয়া হয় সারা বছর। এখনও পর্যন্ত কোনও হরিণ অসুস্থ হয়নি। তাদের ওপর সর্বক্ষণ বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।