দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সবেমাত্র স্থায়ীভাবে বসবাসের ছাড়পত্র মিলেছে। মিলেছে পরিচয় পত্র – ভোটার কার্ড। আসন্ন বাঁকুড়া লোকসভা আসনে তাই জীবনে প্রথম ভোট দেওয়ার জন্য ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গেছে দুর্গাপুরের দামোদর চরের সোনাইচন্ডীপুরের বাসিন্দাদের। সোনাইচন্ডীপুর হল দুর্গাপুরের দামোদর ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকা। কিন্তু জায়গাটি বর্তমানে বাঁকুড়া লোকসভা আসনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার থেকে সোনাইচন্ডীপুরের দুরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। বাঁকুড়ার মেজিয়া প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। দামোদর ব্যারেজের খাল পেরিয়ে মায়া বাজার দিয়ে গান্ধী মোড়ে হয়ে সিটি সেন্টারে আসতে হয় এখানের বাসিন্দাদের।
গত প্রায় চল্লিশ বছর আগে রুজি রোজগারের টানে নদিয়া, ২৪ পরগনা, বর্ধমান সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষের বসবাস শুরু হয় এই সোনাইচন্ডীপুরে। বর্তমানে এখানে প্রায় ৪০ টি পরিবারের বসবাস। জীবন-জীবিকা বলতে দামোদরের চরে চাষ-আবাদ। একসময় এলাকায় কোন অপরাধ ঘটলে দুর্গাপুর ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন থানার মধ্যে এলাকা কার সেই নিয়ে দড়ি টানাটানি চলত। ছিল না এলাকায রাস্তা, পানীয় জল, আলোর ব্যবস্থা। কিন্তু বর্তমানে সেসব সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে গত বছর সোনাইচন্ডীপুরের মানুষজন পশ্চিম বর্ধমানের পরিবর্তে বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। বাসিন্দারা হাতে পেয়েছেন সচিত্র পরিচয় পত্র। তাই সোনাইচন্ডীপুরের বাসিন্দাদের জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় কমিউনিটি হলে মাত্র ৭৭ জন ভোটারের জন্য হচ্ছে ভোট কেন্দ্র। এতদিন তাঁরা পোলিং বুথ, পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার, কেন্দ্রীয় বাহিনী, ইভিএম, ভিভি প্যাট ইত্যাদি শব্দ শুনেই ক্ষান্ত হতেন। এবার স্বচক্ষে এইসব জিনিস দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সোনাইচন্ডীপুর। রবিবার বাঁকুড়া লোকসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ পর্ব। তার আগে তাই দামোদরের চরে এই এক টুকরো ছিটমহল সোনাইচন্ডীপুরে গণতন্ত্রের উৎসবকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?