শ্রেণি কক্ষের ছাদ ধ্বসে পড়ার আতঙ্কে দুটি ক্লাস রুমে ১৪৩ জন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে পঠন-পাঠন। সর্বশিক্ষা দপ্তর যে টাকা বরাদ্দ করেছে তাতে বিদ্যালয় গৃহের আংশিক মেরামত কাজও সম্পূর্ণ করা যাবে না। এমনটা নিশ্চিত হয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভগ্নপ্রায় বিদ্যালয় গৃহের মেরামতের কাজটুকুও শুরু করতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সাল থেকে কার্যত শিকেয় উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের শম্ভুপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন। বিদ্যালয়ে বসে ছাত্র-ছাত্রীদের মিড-ডে মিল খেতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সমাধানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্লক ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

শম্ভুপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৈরি হয়েছিল সাতটি শ্রেণি কক্ষ। পরবর্তী কালে ২০০৭ সালে সর্বশিক্ষা দপ্তরের দেওয়া অর্থে দুটি অতিরিক্ত ক্লাসরুম তৈরি হয়। বিদ্যালয়ে প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট পড়ুয়া সংখ্যা ১৪৩ জন। ৫ জন শিক্ষক এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সাবেক বিদ্যালয় গৃহ ভেঙে পড়ার উপক্রম হওয়ায় পড়ুয়া থেকে শিক্ষক সকলেই এখন দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজীব মণ্ডল জানান, সাতটি ক্লাস রুমের অবস্থা বিপদজনক। বর্তমানে ওই সব ক্লাস রুমের ছাদের বড় বড় চাঙড় ভেঙে পড়ছে। ফাটল ধরেছে ক্লাস রুমের দেওয়ালে । জানালা ও দরজা সব নষ্ট হয়ে গেছে। আতঙ্কে ছাত্র-ছাত্রীরা ওই সব ক্লাসরুমে ঢুকতে চায় না। বিপদজনক ক্লাস রুমে ছেলে মেয়েদের ঢুকতে দিতে মানা করে গেছেন অবিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সাল থেকে দুটি ক্লাস রুমে ১৪৩ জন পড়ুয়াকে নিয়ে প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস কোনরকমে চালিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক বলেন,  সর্বশিক্ষা দপ্তর সহ জেলা প্রশাসনের নানা মহলে বিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থার কথা বারে বারে জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন বাদ ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর সর্বশিক্ষা দপ্তর ২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে হিসাব কষে দেখা গেছে এই টাকায় বিদ্যালয়ের সাতটি ক্লাস রুমের ১৭০০ বর্গফুট ছাদের ঢালাইটুকু হয়তো কোন রকমে সম্পূর্ণ করা যাবে। কিন্তু ফাটল ধরা দেওয়াল মেরামত না করে ছাদ ঢালাই করার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। বাকি  আর কোন মেরামত কাজের অর্থ নেই। সেকারণে এই টাকা এলেও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সমস্যার সমাধানের আবেদন নিয়ে খুব শীঘ্র ব্লক ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন বলে প্রধান শিক্ষক রাজীব মণ্ডল জানিয়েছেন।

Like Us On Facebook