আনন্দের মুহুর্ত, সপরিবারে রাজেন কুমার সিং গাড়ির শো-রুমে

দুর্ঘটনার দু’দিন আগে নতুন গাড়ি কিনেছিলেন রাজেন সিং-এর বাবা শেষনাথ সিং। ২২ মার্চ সেই মারুতি সুজুকি সিয়াজ গাড়িতে চেপেই সপরিবারে রওনা হয়েছিলেন পাটনার উদ্দেশ্যে। পথে বর্ধমানের রথতলার কাছে ঘটে যায় সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় রাজেন ছাড়াও তাঁর বাব, মা, স্ত্রী, দুই কন্যা ও পুত্র অর্ভ মারা যায়।

৬ বছরের অর্ভকে চোখের সামনে নিস্তেজ হতে দেখার স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না রথতলা এলাকার মানুষজন। বিশেষ করে মহিলারা, তাঁদের কষ্ট যেন একটু বেশিই। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, দুর্ঘটনাস্থলের দিকে তাকালেই ভেসে আসছে ৬ বছরের অর্ভ’র আর্তি, ‘uncle save me, uncle save me’. ঘটনার পাঁচদিন পর স্থানীয় মহিলা কাজল কোলে বলেন, ‘আমার বাড়ির উঠোন থেকে দুর্ঘটনাস্থলটি পরিষ্কার দেখা যায়। তুলসি গাছে প্রদীপ দিতে গিয়ে বারবার চোখটি ওইদিকে চলে যায় আর কানে ভেসে আসে অর্ভ’র করুণ আবেদন। মনটা ভীষণ ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনাটি আমাদের মনে দাগ কেটে দিয়ে গেছে।’ স্থানীয় যুবক সুবীরও একই কথা বললেন, ‘ঘটনাস্থলের কাছেই আমার বাড়ি। সেই সময় আমি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াচ্ছিলাম। ভীষণ জোরে শব্দ শুনে আমি চমকে উঠি। ছুটে যাই ঘটনাস্থলে। দেখতে পাই গরম পিচভর্তি ট্যাঙ্কারের নীচে একটি গাড়ি চাপা পড়ে আছে। আর শুনতে পাই অর্ভ’র আর্তনাদ ‘uncle save me’ … পারলাম না বাঁচাতে অর্ভকে। সেই আর্তনাদ আজও আমার কানে ভাসছে। ফুটন্ত পীচ পড়ে ঘটনাস্থলে রাস্তার কিছুটা অংশ গর্ত হয়ে গেছে। এখন রাতের দিকে দ্রুত গতিতে ওই গর্তের উপর দিয়ে গাড়িগুলি যাবার সময় বীভৎস আওয়াজ হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই আতঙ্কে ঘুম ভেঙ্গে যায় আর মনে হয় আবার কোন দুর্ঘটনা ঘটল নাকি।’

দুর্ঘটনার পর গাড়িটি
ঘাতক ট্যাঙ্কার

 

Like Us On Facebook