কারখানার শ্রমিক নেতা ও অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে অ্যালয় স্টিল প্লান্ট(এএসপি) নিয়ে কোন আশার আলো দেখাতে পারলেন না বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। স্বাভাবিকভাবেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতারা এএসপির বিলগ্নিকরণের প্রশ্নে সাংসদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় কার্যত হতাশ।

শনিবার এএসপি কারখানা বাঁচাতে সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার দারস্থ হন বিএমএস, আইএনটিইউসি, এইচএমএস সহ বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বিজেপি সাংসদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। যদিও বৈঠকে সিটু ও আইএনটিটিইউসি প্রতিনিধিরা ছিলেন না। বৈঠকে সিটু ও আইএনটিটিইউসিকে না ডাকার অভিযোগ ওঠে। এদিন শ্রমিক সংগঠনের পাশাপাশি এএসপি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও সাংসদের পৃথক বৈঠক হয়। কিন্তু দুই পক্ষ আলাদা আলাদা করে সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করলেও সাংসদ শ্রমিক নেতাদের ও অফিসারদের এএসপি বিলগ্নিকরণের থেকে বাঁচানোর এখনই কোন পথ দেখাতে পারেন নি বলে অভিযোগ। যদিও কারখানার শ্রমিক সংগঠন ও অফিসারদের ডাকে তিনি আগামী শনিবার কারখানায় গিয়ে সেখানে কারখানা বাঁচানোর ক্ষেত্রে তাঁদের বিকল্প প্রস্তাব বিস্তারিত ভাবে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।

সাংসদ এদিন বলেন, ‘আমি তো ২৩ মে সাংসদ হয়েছি। কিন্তু এএসপি কারখানার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত দু’বছর আগেই নেওয়া হয়েছিল। শুধু এএসপি কারখানাই নয় সালেম, ভদ্রাবতী কারখানা সহ দেশের একাধিক কারখানায় বিলগ্নিকরণের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’ সাংসদের এদিনের বক্তব্য নিয়ে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রকাশ্যে না বললেও শ্রমিক নেতারা বলেন, ‘পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই এএসপি কারখানাকে আমরা হিন্দুস্তান কেবলসের পথেই যেতে দেখব।’

দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বলেন, ‘এএসপি কারখানা বাঁচাতে আমারই প্রথম আন্দোলন শুরু করি অথচ শনিবার সাংসদের সঙ্গে বৈঠকে আমাদের ডাকাই হল না। আমরা এএসপি কারখানা বাঁচাতে একাধিক বার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ইস্পাত মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এএসপি কারখানা থেকে বিলগ্নিকরণের নোটিশ প্রত্যাহার করেনি।’ সন্তোষ দেবরায় আশঙ্কা করে বলেন, ‘এএসপি কারখানায় বিলগ্নিকরণ হলেই ডিএসপি কারখানার উপরও কোপ পড়বে। শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর বাঁচাতে তাই দুর্গাপুরের সর্বস্তরের মানুষকে পথে নেমে এএসপি কারখানা বাঁচাতে আন্দোলনে সামিল হতে হবে। আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে এইজন্য চিঠিও দিয়েছি।’

এদিকে এএসপি কারখানা বাঁচাতে ফের তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এক গুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করল শনিবার। জানা গেছে ১০ জুলাই থেকে শ্রমিক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এএসপি কারখানা সহ দুর্গাপুরের সর্বত্র লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে। আর ১১ জুলাই আইএনটিটিইউসির সভানেত্রী দোলা সেন দুর্গাপুরে এসে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেবেন।

বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?

Like Us On Facebook