লকডাউনের জেরে কর্মচ্যুত। অন্যদিকে, লকডাউনের পরিস্থিতিতে গরীব মানুষদের জন্য কিছু করার ভাবনা। সেই মানসিকতা থেকেই অভিনব ভ্রাম্যমান রেস্তোঁরা বানিয়ে এবার নজর কাড়লেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ২ ব্লকের পাহাড়হাটী এলাকার বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল। একটি ট্রাককে রেস্তোঁরার রূপ দিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন আস্ত একটা রেস্তোঁরা। রয়েছে একসাথে ৫০ জনের বসার ব্যবস্থা। নীচের তলা থেকে দোতলায় খাবার পৌঁছানোর জন্য রয়েছে একটি লিফটও। অভিনব এই রেস্তোঁরা নজর কেড়েছে সকলেরই। পথচলতি মানুষ কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ছেন এই ভ্রাম্যমান রেস্তোঁরার সামনে। ছবিও তুলছেন। ভ্রাম্যমান এই রেস্তোঁরার নাম ‘ইন্দো কন্টি’। যার কর্ণধার মেমারির পাহাড়হাটির বাসিন্দা পার্থ মন্ডল। পার্থবাবু জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ চলছে। বন্ধ হোটেল-রেস্তোঁরা। কিন্তু তার এই অভিনব উদ্যোগের মাধ্যমে একদিকে যেমন তিনি হোম ডেলিভারির মাধ্যমে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়ে কিছু রোজগার করতে পারছেন, তেমনই খাবার তুলে দিতে পারছেন অসহায় মানুষদের মুখেও।
পার্থবাবু জানান, আজ থেকেই শুরু হয়েছে তাঁর ভ্রাম্যমান রেস্তোঁরার পথ চলা। শুরু হয় মেমারির পাহাড়হাটী বাজার এলাকা থেকেই। সরকারি করোনাবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নয়, অসহায় মানুষের স্বার্থেই নিয়ম মেনে কাজ করবে এই ভ্রাম্যমান রেস্তোঁরা। হোম ডেলিভারির পাশাপাশি এখান থেকেই দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য খাবার তৈরি করে সেই খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন মেমারি স্টেশন, মেমারি বাস স্ট্যান্ড সহ অন্যান্য জায়গায় থাকা অসহায় মানুষদের মধ্যে।
২০১৩ সালে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করার পর পার্থবাবু চেন্নাই ও গোয়াতে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি পাড়ি দেন দুবাইয়ে। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েন পার্থবাবু। আটকে পড়েন দুবাইয়ে। কোনরকমে ফিরে আসেন দেশে। এরপরেই শুরু হয় তাঁর এই ভাবনাকে একটু একটু করে বাস্তবে রুপ দেওয়ার কাজ। একদিকে কিছু টাকা উপার্যনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনের খাবার থেকে কিছু অংশ অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য প্রদান করা তাঁর মুখ্য উদ্দেশ্য।