পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে গত ছয় মাস ধরে দুর্গাপুরে চলছিল এক প্রতারণা চক্র। পুরুলিয়ার মনিহারার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নামের এক যুবক দুর্গাপুরের অম্বুজা আবাসনের এক ভাড়া বাড়িতে বসেই এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল। অভিযোগ, কখনও নিজেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসিপি আবার কখনও নিজেকে মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসিপি পরিচয় দিত অভিযুক্ত ব্যক্তি। বিষয়টি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দুর্গাপুরের গোয়েন্দা পুলিশের নজরে আসতেই প্রতারক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে শুক্রবার রাতে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ তারপর তথ্য প্রমাণ পেয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। জানা গেছে, ধৃতের গাড়ি চালকেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

দুর্গাপুরের ডিসিপি অভিষেক গুপ্তা বলেন, ‘নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের কাছ থেকে ‌বেশকিছু নকল আগ্নেয়াস্ত্র, আই কার্ড উদ্ধার হয়েছে। এইসব নকল আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করত এই যুবক। আমরা এই নকল আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে টেস্ট করার জন্য ল্যাবে পাঠাচ্ছি। আমরা জানতে পেরেছি একজন পুলিশ কনস্টেবলের চাকরির পাইয়ে দেওয়ার জন্য ধৃতকে এক লাখ টাকা দিয়েছেন। আমরা ধৃতকে আদালতে হাজির করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে সেই টাকা উদ্ধার করবো এবং এই প্রতারণা চক্রের মধ্যে কতজন প্রতারক রয়েছে এবং তাঁরা কতজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সব কিছু তদন্ত করা হবে।’

এদিকে, প্রবীর প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি অভিযুক্তকে পুলিশের চাকরির জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মুম্বাইতে থাকতাম। লকডাউনে চাকরি চলে গেছে। দুর্গাপুরে আসার পর এই ব্যক্তিকে চাকরির জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছি। তার লিখিত প্রমাণ রয়েছে। পুলিশের হাতে সেই প্রমাণ দিয়েছি। আমি বুঝতে পারি নি। পুলিশের বড়বাবু মনে করেছিলাম। তাই সন্দেহ হয়নি মনে। এখন বুঝতে পারছি ইনি একজন প্রতারক। আমার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।’ এদিকে ধৃত দাবি করে বলেন, ‘আমিও পুলিশের চাকরির জন্য একলাখ টাকা দিয়েছি অনিরুদ্ধ বড়াল নামের একজনকে। তিনি আমার একলাখ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন।’ ধৃত ব্যক্তি প্রবীর প্রামাণিকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে একলাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।


 

Like Us On Facebook