ডাকাতরানি দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠকের প্রচুর নিদর্শন ও ঐতিহাসিক ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে দেবী চৌধুরানির সুড়ঙ্গ পথটিতে কিন্তু সেই সুড়ঙ্গ পথটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। দেশপ্রেমী মানুষদের অবদানের কথা ও তাদের আত্মবলিদানের কথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আশু প্রয়োজন সুড়ঙ্গ পথটির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দুর্গাপুর নগর নিগমের উদাসীনতায় দেবী চৌধুরানির ব্যবহৃত গুহার সেই সুড়ঙ্গ পথটি নষ্ট হতে বসেছে। অম্বুজা আবাসন এলাকায় মাটির নীচে চুন-সুড়কির এই সুড়ঙ্গ পথটি ২০০৯ সালে হঠাৎ আবিষ্কার করেন অন্ডালের এক ব্যক্তি। তিনি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের অধীন অম্বুজা আবাসনে লটারির মাধ্যমে জমি কেনেন। দুর্গাপুর অভিজাত এলাকায় বাড়ি করার স্বপ্ন নিয়ে নিজের জমিতে খনন করতে গেলে দীর্ঘ একটি চুন-সুড়কির সুড়ঙ্গ দেখতে পান। মানুষের মনে নানান কৈতুহল শুরু হল। এই সংবাদ পেয়ে দুর্গাপুর নগর নিগমের হেরিটেজ কমিটি ওই ব্যাক্তির কাছ থেকে জমিটি অধিগ্রহণ করে নেয়।
পরবর্তী ক্ষেত্রে দুর্গাপুর নগর নিগম ওই সুড়ঙ্গের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়। ২০০৯ সালের ১৫ আগষ্ট সুড়ঙ্গটির চারিধারে জমে থাকা আগাছা পরিষ্কার পরিছন্ন করে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে উন্মুক্ত করে দেয় দুর্গাপুর নগর নিগম। এবং দেখভালের জন্য নিয়োগ করা হয় একজন কর্মচারি। বেশ কিছুদিন সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। এরপর রাতারাতি সবকিছু উধাও। দেখা মেলে না কোন কর্মচারির। দেখভালের অভাবে জমতে শুরু করল আগাছা ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ পথটির চারিধারে।
বয়স্ক মানুষদের মুখে শোনা যায় এই সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে দেবী চৌধুরানি যেমন পাশের ঝিলে স্নান করতে যেতেন সকলের অন্তরালে তেমনি এই সুড়ঙ্গ পথের কিছুটা দূরে বড় একটি গুহাও রয়েছে। আপদ কালীন পরিস্থিতিতে ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানি ও আন্যান্য বিপ্লবীরা সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে গুহার মধ্যে পৌঁছে যেতেন এবং গুহার উপর উঠে শত্রুপক্ষের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতেন। বর্তমান সেই ঝিল এবং সুড়ঙ্গ পথ নষ্ট হতে বসেছে।
দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়র পারিষদ, প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বর্ধমান ডট কম কে বলেন,”দুর্গাপুর নগর নিগম দুর্গাপুর শহরকে নতুন ভাবে সৌন্দর্যায়ন করছে। এই সুড়ঙ্গ পথটির রক্ষণাবেক্ষণ ও আরও আকর্ষণীয় করে মানুষের কাছে তুলে ধরতে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”