মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি সোমবার থেকে এক পক্ষকাল ব্যাপী মৎস্য চাষ প্রসার কর্মসূচী শুরু হল। সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি খামারে এই কর্মসূচীর সূচনা করলেন বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন গলসির বিধায়ক তথা প্রাক্তন বর্ধমান জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ অলোক মাঝি, বর্তমান কর্মাধ্যক্ষ মন্দিরা দলুই, বর্ধমান ১নং পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী ফাল্গুনী দাস রজক সহ মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকরাও।

সভাধিপতি এদিন জানিয়েছেন, রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গোটা রাজ্যে প্রতিদিন যে পরিমাণ মাছের চাহিদা তার অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে বাইরে থেকে মাছ নিয়ে আসার প্রবণতা অনেকটাই কমেছে। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান জেলা পরিষদ এবং জেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে তাঁরা জেলার সমস্ত জলাশয়কেই মাছ চাষের জন্য ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে সরকারি বিভিন্ন পুকুর বা জলাশয়গুলিতেও নিয়ম করে মাছের চাষ করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, মৎস্য চাষের প্রসার ঘটাতে কোনো জলাশয়কে মাছ চাষের বাইরে রাখা যাবে না বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশ জারী করা হয়েছে। একইসঙ্গে মৎস্য চাষীদের আগ্রহী করে তুলতে তাদের বিভিন্ন সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, গত২৯ জুন পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মাছ চাষ, মুরগী, হাঁস প্রতিপালনকে আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে যান। তারই অঙ্গ হিসাবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এদিন জেলা কৃষি খামারের বড় পুকুরে ২২০০ চারাপোনা ছাড়া হয়েছে। এছাড়াও আগামী ১৫ দিন ধরে চলতে থাকা এই কর্মসূচিতে গোটা জেলার বিভিন্ন জলাশয়ে চারা পোনা ছাড়া হবে। এছাড়াও প্রতি ব্লকে ব্লকে এই ১৫ দিন ধরে চলবে মাছ চাষ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা ও প্রশিক্ষণ পর্বও। পূর্ব বর্ধমান জেলা উপ মৎস্য আধিকারিক আয়ুব আলি মণ্ডল এদিন জানিয়েছেন, বড় মাছের পাশাপাশি চুনো মাছ যেমন ট্যাংরা, মৌড়লা, খয়রা প্রভৃতি মাছ চাষের জন্যও চাষীদের তাঁরা উৎসাহিত করছেন।

একইভাবে, রাজ্য মৎস্য দপ্তর ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মৎস্য চাষে উৎসাহ দিতে জেলা জুড়ে প্রসার কর্মসূচী শুরু হল এদিন। চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। সোমবার দুর্গাপুরের মুচিপাড়া সংলগ্ন খাট পুকুরের লাল সায়র মৎস্য খামারে জেলা মৎস্য দপ্তরের আধিকারিক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস লাল সায়েরে ১০০ কেজি মাছের চারা ছাড়েন। জানা গেছে পশ্চিম বর্ধমানের ৫টি ব্লকে ১৬টি ইউনিটে মাছের চারা ছাড়া হবে ইউনিট প্রতি ১ ক্যুইন্টাল করে। এদিনের মৎস্য প্রসার কর্মসূচিতে মৎস্য চাষ নিয়ে সরকারি প্রকল্প গুলি জানতে প্রচুর মৎস্যচাষী যোগদান করেন। এছাড়াও শিল্পাঞ্চলের ১০ টি খোলামুখ খনিতে মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছের চাষ করা হবে।

Like Us On Facebook