Photo Collected from Internet

এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানীর দাম ৩৪০ টাকা, অবাক হচ্ছেন! যেখানে কলকাতার নামী দোকানে এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানি পাওয়া যায় ২৫০ টাকার মধ্যে। মটন বিরিয়ানির জন্যে খরচ করতে হয় ৩৫০-৩৭৫ টাকার মতো। বর্ধমান শহরে ভাল দোকানে চিকেন বিরিয়ানি পাওয়া যায় ২০০ টাকার আশেপাশে। আর মটনের জন্য আরও কিছু টাকা দিতে হয়। সেখানে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদে এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানির জন্য খরচ ৩৪০ টাকা আর মটন বিরিয়ানির জন্যে দিতে হবে ৪৫০ টাকা! খোলা বাজারে ৫০০ মিলিলিটারের পানীয় জলের বোতলের দাম ১০ টাকা। এক সঙ্গে অনেক জলের বোতল কিনলেও জেলা পরিষদকে একই দাম দিতে হবে।

সভাধিপতি বলেন, ‘আমার কাছে ওই টেন্ডার অনুমোদনের জন্যে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে সর্বনিম্ন যে দর দেওয়া হয়েছিল তা সাধারণত খোলা বাজারের থেকেও বেশি। আবার জলের বোতলের দাম খোলা বাজারের সমান। এক সঙ্গে অনেক প্যাকেট জল কিনলে দাম কম হওয়ার কথা, এখানে সেটা হয়নি। সে জন্য টেন্ডারের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।’

জেলা পরিষদের সদস্যদের দাবি, ওই টেন্ডার বাতিল করার জন্যে সভাধিপতি বলেছেন। একই সঙ্গে সভাধিপতি প্রশ্ন তুলেছেন, খোলা বাজারের চেয়ে বেশি দর দেওয়ার পরেও আধিকারিকরা তাতে মান্যতা দিলেন কী ভাবে? আর যে সংস্থার সঙ্গে জেলা পরিষদের অস্থায়ী কর্মচারী জড়িয়ে রয়েছে, তাঁরাই বা কী ভাবে টেন্ডার জমা দেয়?

সম্প্রতি জেলা পরিষদ সারা বছর ধরে খাবার সরবরাহের জন্যে টেন্ডার ডেকেছিল। সেখানে সবচেয়ে কম দাম দিয়ে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল জেলাপরিষদেরই এক অস্থায়ী কর্মীর সাথে সংযুক্ত একটি সংস্থা। সব টেবিলেই ওই টেন্ডারকে মান্যতা দেওয়ার কথা বলে গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারের কাছে অনুমোদনের জন্যে সেই টেন্ডার পাঠানো হয়। তিনি চিকেন বিরিয়ানি আর জলের দাম দেখে চমকে ওঠেন। এরপরেই তিনি জেলা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের মাধ্যমে ও নিজস্ব সূত্রে কলকাতার বিভিন্ন বিরিয়ানি দোকানের দাম জানেন। বর্ধমানের দোকানে কোথায় কত দামে বিরিয়ানি পাওয়া যাচ্ছে, তারও খোঁজ নেন। তারপরেই সভাধিপতি অনুমোদন দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। বৃহস্পতিবার তিনি টেন্ডার ফাইল ফেরত পাঠিয়ে বাতিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ওই সংস্থা ছাড়াও আরও তিনজন টেন্ডার জমা করেছিলেন। তাঁদের দেওয়া দাম আরও উপরের দিকে ছিল। সর্বনিম্ন দর দেওয়া সংস্থাটি ভাল মানের জলখাবারের জন্যে ২০০ টাকা, চপ-মুড়ির ২৫ টাকা, ভেজ মোমো (৬টি) ১৭০ টাকা, চিকেন মোমো (৬টি) ২০০ টাকা দর দিয়েছিল।

জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি গার্গী নাহা বলেন, ‘আমরাও তো বাইরে খাওয়াদাওয়া করি। রেস্তোরাঁতে বসেও এত দাম দিতে হয় না। সভাধিপতি ভাল পদক্ষেপ নিয়েছেন।’ তবে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কল্লোল নন্দন। তাঁর কথায়, ‘ওই সংস্থাই এত দিন ধরে জেলা পরিষদে খাবার সরবরাহ করেছে। এ বার নিশ্চয়ই বর্তমান কর্তাদের সঙ্গে বোঝাপড়ায় গোলমাল হয়েছে, সে জন্য টেন্ডার আটকে দিয়েছে।’

Like Us On Facebook