ছেলের মৃত্যুর পর পুত্রবধূর একাকিত্ব কাটাতে এবং তাকে নতুন জীবনের পথে এগিয়ে দিতে শ্বশুরমশাই সমন্ধ করে বৌমাকে ফের পাত্রস্থ করলেন। আর সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শ্বশুরমশাইয়ের মহানুভবতা নিয়ে সাধুবাদ জানালেন সকলেই। বুধবার সকালে দুর্গাপুরের পিয়ালা মন্দিরে শ্বশুরমশাই বাবার ভূমিকা পালন করে বউমার নিঃসঙ্গতা কাটাতে বৈদিক রীতি মেনেই তাকে ফের পাত্রস্থ করলেন। দুর্গাপুরের ডিপিএল কলোনির বণিক পাড়ার ব্যবসায়ী অজয় শাসমল বউমার বিয়ে দিয়ে সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা পালন করে দুর্গাপুরে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।

জানা গেছে, অজয় শাসমলের ছেলে উত্তম শাসমলের সঙ্গে সাত বছর আগে সমন্ধ করে বিয়ে হয় দেবশ্রী শাসমলের। কিন্ত নিয়তির পরিহাসে এক পথ দুর্ঘটনায় উত্তমের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ফলে পরবর্তী সময়ে উত্তম মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করে। উত্তম এবং দেবশ্রীর একটি পাঁচ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। পুত্রহারা অজয় শাসমলকে ছোট্ট নাতি এবং বউমার নিঃসঙ্গতা যেন কুরে কুরে খেত। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বউমার একাকিত্ব কাটাতে এরপরেই বউমার বিয়ে দিতে পাত্র দেখা শুরু করে দেন অজয় শাসমল। শেষমেশ অজয় শাসমলের ব্যবসার এক সময়ের কর্মী স্থানীয় কড়ঙ্গ পাড়ার বাসিন্দা সন্তোষ নায়েকের সঙ্গে অজয় শাসমল বৌমা দেবশ্রীর বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

বুধবার সকালে দুর্গাপুরের পিয়ালা মন্দিরে অজয় শাসমল নিজে বাবার ভূমিকা পালন করে বউমা দেবশ্রীকে সন্তোষ নায়েকের সঙ্গে বিয়ে দিলেন। বউমার সিঁথিতে সন্তোষ সিন্দুর দান করার পর অজয় শাসমল সন্তোষ-দেবশ্রীকে আশির্বাদ করলেন সকলের সামনে। বিয়েতে সন্তোষ নায়েকের বাড়ির লোকজন উপস্থিত থাকলেও দেবশ্রীর বাপের বাড়ির লোকজন উপস্থিত ছিলেন না। পরে মেয়ের বিয়ের খবর জেনে দেবশ্রীর বাড়ির লোকজন ফোনে বর্ধমান ডটকমকে তাঁদের খুশির কথা জানান। বউমার বিয়ে দিয়ে অজয় শাসমল বলেন, ‘অনেক সংসারে শ্বশুর-শাশুড়ি বউমাদের পরের ঘরের মেয়ে বলে মেনে নিতে পারেন না। কিন্ত বউমা হল শ্বশুর-শাশুড়ির আর এক মেয়ে। তাই ছেলের মৃত্যুর পর বউমার ভবিষ্যৎ নিয়ে এবং বউমার নিঃসঙ্গতা আমাকে কুরে কুরে কুরে খেত। তাই আমি আমার পারিবারিক পরিচিতের সঙ্গে বউমার বিয়ে দিয়ে দেবশ্রী ও সন্তোষকে আমার হৃদয়ে মেয়ে ও জামাইয়ের আসন দিলাম।’


Like Us On Facebook