অবশেষে করোনা নির্মূল করার লক্ষে হায়দ্রবাদের ভারত বায়োটেক, আইসিএমআর এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির যৌথ উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকসিন ‘কোভ্যাক্সিন’-এর হিউম্যান ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দিতে গেলেন দুর্গাপুরের স্কুলশিক্ষক চিরঞ্জীত ধীবর। শুক্রবার ভোররাতে চিরঞ্জীত ধীবর রওনা দেন ভুবনেশ্বরের উদ্দেশ্যে। জানা গেছে, ভুবনেশ্বরে পৌঁছানোর পর আজ, শনিবার থেকেই চিরঞ্জীতবাবুর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়েছে।
ভারত বায়োটেক এবং আইসিএমআর দেশের ১২টি হাসপাতালকে বেছে নিয়েছে ‘কোভ্যাক্সিন’-এর হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য। তার মধ্যে আছে ভুবনেশ্বরের ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড এসইউএম হাসপাতাল। জানা গেছে, ভুবনেশ্বরের ওই হাসপাতালের কোভ্যাক্সিন ট্রায়ালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ২২ জুলাই ই-মেল মারফৎ চিরঞ্জীতবাবুকে ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য ভুবনেশ্বরে আসার আমন্ত্রণ জানান। জানা গেছে, আগস্টে দুটি ফেজে কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়াল হবে। তার আগে চিরঞ্জীতবাবু ভুবনেশ্বরে পৌঁছলে তাঁর প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন বিশিষ্ট সব বিজ্ঞানীরা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ট্রায়ালে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের গোটা আগস্ট মাস ধরে পর্যবেক্ষণ রাখা হবে। তাঁদের শরীরে কোভ্যাক্সিন প্রয়োগে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা বা সফল প্রয়োগ হয়েছে কিনা তা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করবেন বিজ্ঞানীরা।
ভুবনেশ্বর রওনা হওয়ার আগে বর্ধমান ডট কমকে একান্ত সাক্ষাৎকারে চিরঞ্জীত ধীবর বলেন, ‘আমি দেশ মাতৃকার জন্য নিবেদিত প্রাণ। তাই দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য ভুবনেশ্বর যাচ্ছি, ঈশ্বর যেন আমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন।’ চিরঞ্জীত ধীবরের মা প্রতিমা ধীবর ছেলের জন্য গর্ব বোধ করে জানান, চিরঞ্জীত রাজ্যে প্রথম আইসিএমআর-এর করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়ালের স্বেচ্ছাসেবী হওয়ার জন্য আবেদন করে। আইসিএমআর চিরঞ্জীতের সেই আবেদন গ্রহণ করে এবং অবশেষে শুক্রবার চিরঞ্জীত রওনা হয়। প্রতিমাদেবী বলেন, ‘কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়াল সফল হোক, মানুষের মঙ্গল হোক। অনেক অনেক শুভকামনা রইল এই হিউম্যান ট্রায়ালের উপর এবং আমি চাই সফল হয়ে সুস্থ শরীরে আমার ছেলে বাড়ি ফিরে আসুক।’ এদিকে, করোনার প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়ালে চিরঞ্জীতবাবুর অংশ নিতে যাওয়ার খবরে দুর্গাপুরের মানুষ তাঁকে শুভকামনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশের মানুষ এই ভ্যাকসিনের সফলতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।