‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পকে উৎসাহ দিতে বনদপ্তরের আধিকারিকের উদ্যোগে দুর্গাপুরের বিধান নগরের বনদপ্তর নুতন সাজে সেজে উঠছে। নুতন জেলা পশ্চিম বর্ধমানের মোট ৭ টি ব্লকে সবুজায়নের লক্ষ্যে বনদপ্তর এক গুচ্ছ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। রাজ্য সরকার স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকদের সবুজশ্রী প্রকল্পে নোডাল অফিসার করে সবুজায়নের বৃহৎ কর্মকাণ্ড শুরু করলেও প্রকৃতপক্ষে বনদপ্তরই সবুজশ্রী প্রকল্পের বিভিন্ন গাছের প্রতিপালন করছেন বলে জানা গেছে। সবুজায়নের লক্ষ্যে ‘একটি জন্ম একটি গাছ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট আবেদককে তার পুত্র অথবা কন্যার জন্ম শংসাপত্র দেখে সবুজশ্রী প্রকল্পের একটি মূল্যবান গাছ বরাদ্দ করছেন। সংশ্লিষ্ট আবেদককে এর পরই বন দপ্তর উৎসাহ দিতে সরকারি প্রকল্পের একটি মুল্যবান গাছ সমেত প্রয়োজনীয় জৈব সার সহ গাছটি ভবিষ্যতে কাটার প্রয়োজনীয় আগাম অনুমতি পত্র সহ একটি সবুজশ্রী প্রকল্পের ব্যাগ দিয়ে দিচ্ছেন একই সঙ্গে। যাতে ভবিষ্যতে গাছটির পূর্ণাঙ্গ বয়সের পর সংশ্লিষ্ঠ আবেদক প্রয়োজনে ওই গাছটি কেটে বিক্রি করতে পারেন।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের সবুজশ্রী প্রকল্পটি নবজাতকদের জন্য। যেখানে বাড়ির নবজাতক উপহার পাবে একটি বৃক্ষ-শিশু। একই সঙ্গে বেড়ে উঠবে দু’জনে। পরে প্রাপ্তবয়স্ক গাছটি সহায় হবে তরুণ-তরুণীর। গাছটি বিক্রি করে তাঁরা একসঙ্গে বেশ কিছু টাকার সংস্থান করতে পারবেন। তবে, সবুজশ্রীর এই উপহার সবার জন্য নয়। সন্তানের জন্ম যদি কোনও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হয়, তবেই মিলবে অর্থকরী গাছের ওই চারা।
জানা গেছে এখনও পর্যন্ত আসানসোলের ৪টি ও দুর্গাপুরের ৩টি, মোট ৭ টি ব্লকে প্রবল উৎসাহে ৬৪০০ টি সবুজশ্রী প্রকল্পের চারা গাছ নিয়েছেন আবেদকরা। জানা গেছে মেহগনি, সেগুন, গামার, নিম, শিশু, শাল ইত্যাদি গাছের চারা দেওয়া হচ্ছে সবুজশ্রী প্রকল্পের আবেদকদের। একই ভাবে দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকার ৪৩ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এই প্রকল্পের অধীনে আনতে দুর্গাপুরের বনাধিকারিক মিলন কুমার মন্ডল বর্ধমানের পূর্ব ও পশ্চিম দুই জেলার দুই জেলাশাসকের কাছে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসককে নোডাল অফিসার করে শিল্পাঞ্চলকে দূষণ মুক্ত করতে গ্রিনসিটি করার লক্ষ্যে গাছ বিতরণ করার জন্য একটি প্রস্তাবও দিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের সবুজশ্রী প্রকল্পকে মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করতে দুর্গাপুরের মুখ্য বনপাল মিলন কুমার মন্ডলের ব্যক্তিগত উদ্যোগেই বিভিন্ন স্ট্যাচু, গাছগাছালি ও রঙিন আলো দিয়ে সাজিয়ে বনকর্মীরা বিধাননগরের বনদপ্তরকে নতুন রুপ দিচ্ছেন। দুর্গাপুরের মুখ্য বনপাল মিলন কুমার মন্ডল বর্ধমান ডট কম কে বলেন, ‘উদ্যোগ ব্যক্তিগত না সরকারি সেটা বড় কথা নয়, দুষণ মুক্ত পরিবেশ গড়তে সবুজায়নের লক্ষ্যে সবুজশ্রী প্রকল্পকে মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।