দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের বিগ বাজারের এক কর্মীকে অপহরণের অভিযোগ উঠল বিগ বাজারের কর্মী ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, বিগ বাজারের এক কর্মী রমেশ দাস আদতে পুরুলিয়ায় বাসিন্দা। কর্মসূত্রে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের বিগ বাজারে কর্মরত ছিলেন।
রমেশ দাসের পরিবারের অভিযোগ, রমেশের যেহেতু পুরুলিয়ায় বাড়ি, তাই রমেশকে বহিরাগত তকমা দিয়ে বিগ বাজারের শাসক দলের কর্মী ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন সদস্য প্রায়ই তাঁকে কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ ও হুমকি দিতেন। প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের অর্থ চাঁদা না দিলে কর্মী ইউনিয়নের ওই সদস্যরা রমেশকে নানা রকম হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ রমেশের পরিবারের। চাপ সহ্য করতে না পেরে ২৮ এপ্রিল বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা নির্বাচনের আগের দিন রমেশ বিগ বাজারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে রাস্তা থেকে রমেশ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়।
রমেশ দাসের দাদা উত্তম দাসের অভিযোগ, কর্মী ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য রাস্তা থেকে ডেকে রমেশকে একটি চারচাকা গাড়ি করে হাত-পা বেঁধে উধাও হয়ে যায় ২৮ এপ্রিল। রমেশ দাসের পরিবার দুর্গাপুর থানায় এই সংক্রান্ত একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে বলে জানা গেছে। রমেশ দাসের দাদা উত্তম দাসের আরও অভিযোগ, ওই চারচাকা গাড়িটি মালদা রেল স্টেশনের কাছে এলে গাড়ির মধ্যে অপহরণকারীরা মদ্যপ অবস্থায় বেহুঁশ হয়ে পড়ায় রমেশ গাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে রেল স্টেশনের জিআরপিকে তাঁর অপহরণের কথা সব জানায়। এরপর রেল পুলিশ রমেশর বাড়িতে যোগাযোগ করলে রমেশের পরিবার পুলিশ নিয়ে গিয়ে রমেশকে উদ্ধার করে বলে দাবি। উত্তম দাসের মতোই উত্তম দাসের বাবা হীরালাল দাস ও মা কৌশলা দাসের একই অভিযোগ। রমেশের পরিবার রহস্য উন্মোচন করতে গোটা ঘটনার পুলিশি তদন্তের দাবি জানান এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান। বৃহস্পতিবার রমেশকে পুলিশ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় খবর ছড়িয়ে পড়তেই দুর্গাপুরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, বিগ বাজারের আইএনটিটিইউসি কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মনোতোষ সিকদার রমেশের পরিবারের আনা অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন, ‘রমেশ বহিরাগত বলে তাঁকে কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি বা চাঁদা চাওয়া এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। রমেশের অন্তর্ধানের সঙ্গে বিগ বাজারের কর্মী বা কর্মী ইউনিয়নের কোন সম্পর্ক নেই। এটা একটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমরাও চাই রমেশের অন্তর্ধানের আসল রহস্য উন্মোচন করুক পুলিশ। প্রয়োজনে আমরা পুলিশকে সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। আমরা আসল দোষীর শাস্তি দাবি করছি।’
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?