পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা শহরের দু’বছরের ছোট্ট রিধা জন্ম থেকেই জটিল হার্টের রোগে আক্রান্ত। রিধার শরীর প্রায়ই নীল হয়ে যেত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলে কমপ্লেক্স কনজেনিটাল সায়ানেটিক্যাল হার্ট ডিজিজ। এটি জটিল জিনগত সমস্যা।এই রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্রিটিক্যাল হার্ট কারেকশন করে রক্তনালীতে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক করা হয়।কিন্তু হার্টের এই জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য উন্নত হাসপাতাল নেই পাকিস্তানে। তাই দুই দেশের কূটনৈতিক জটিল সম্পর্কের সব বাধা টপকে মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে রিধার দাদা আব্দুলকে সঙ্গে নিয়ে সোজা দুর্গাপুরে চলে আসেন রিধার বাবা মহম্মদ আসিফ ও মা তানি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫ ডিসেম্বর রিধা দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে ভর্তি হয়।৬ ডিসেম্বর রিধার অস্ত্রোপচার করেন মিশন হাসপাতালর বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শ্রীরুপ চ্যাটার্জি। মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে রিধার অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। মিশন হাসপাতালের বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শ্রীরুপ চ্যাটার্জি বলেন, ‘এই রোগটি হল টেট্রালজি অফ ফ্যালো। কঠিন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হার্টের কারেকশন করা হয়েছে।রিধা এবার সুস্থ জীবন ফিরে পাবে।’

জানা গেছে, এর আগে রিধার দাদা আব্দুলেরও একই অস্ত্রোপচার হয় সাত বছর আগে এই মিশন হাসপাতালেই। রিধার মতো আব্দুলের শরীরও রক্ত চলাচলের সমস্যায় নীল হয়ে যেত।কিন্তু মিশন হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর আব্দুল নতুন জীবন ফিরে পাওয়ায় রিধার বাবা মহম্মদ আসিফ ও মা তানি পুরানো অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করে রোটারি ক্লাবের দ্বারস্থ হন বলে জানা গেছে। এর পরেই রোটারি ক্লাবের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের কাছে রিধার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় দরবার করা হলে ভারত সরকার ছোট্ট রিধার প্রাণ বাঁচাতে দুই দেশের সমস্ত কূটনৈতিক বেড়া জাল সরিয়ে রিধাদের ভারতে আসার অনুমতি দেয়।

জানা গেছে, মহম্মদ আসিফের চার সন্তান। তার মধ্যে দু’জন কমপ্লেক্স কনজেনিট্যাল সায়ানিটিক্যাল হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত।সফল অস্ত্রোপচারের পর রিধার বাবা মহম্মদ আসিফ ও মা তানি মিশন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে ভারতের কুটনৈতিক, প্রশাসনিক ও সমস্ত নাগরিককে কৃতজ্ঞতা জানান।১১ ডিসেম্বর রিধার ছুটি হয় হাসপাতাল থেকে। বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরে যায় রিধারা।

Like Us On Facebook