বছর ঘুরতে না ঘুরতেই যাত্রী পরিবহণে রাজ্য সরকারের গতিধারা প্রকল্প দুর্গাপুরে পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় থমকে গেল। গ্রাম থেকে শহর জুড়ে যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থেই দুর্গাপুরে পুজোর পর চালু হয় রাজ্য সরকারের গতিধারা প্রকল্প। এই প্রকল্পে গাড়ির চালকদের যাত্রী পরিবহণের জন্য গাড়ি কেনার সময় সরকার এক লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেয়। অর্থাৎ গাড়ির দাম ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার মধ্য গাড়ির চালকদের দিতে হয়েছে মাত্র ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। সেই মত গ্রাম থেকে শহর রুটও দেওয়া হয়েছিল গাড়ির চালকদের সঙ্গে আলোচনা করে বলে সরকারি সুত্রে জানা গেছে। কিন্তু রুট গুলি জনবহুল না হওয়ায় কয়েক মাস চলার পর রুটে যাত্রী না পাওয়ায় গতিধারার গাড়িগুলি চরম লোকসানে চলতে শুরু করে বলে জানায় গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি নেওয়া চালকরা। লোকসানে চলার পর গতিধারা থমকে যাওয়ায় সমাধানের পথ খুঁজে না পেয়ে গতিধারার গাড়ি চালক ও প্রশাসনের রুট নিয়ে পরস্পর বিরোধী মন্তব্যে চরম জটিলতা সৃস্টি হয়েছে। গতিধারা প্রকল্পে দুর্গাপুরে মোট ২২টি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়িকে এর মধ্যেই ব্যাঙ্ক ঋণের মাসিক কিস্তি বা ইএমআই পরিশোধ না করতে পারায় টেনে নিয়ে যায় বলে গতিধারার গাড়ি চালকরা জানান। একই আশঙ্কায় অন্যান্য গাড়ি চালকরাও দিন কাটাচ্ছেন।
দুর্গাপুর ম্যাক্সিকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা অরুপ জানার অভিযোগ, গ্রাম থেকে শহর জুড়তে এমন জনহীন রাস্তায় আমাদের রুট দেওয়া হয়েছে, এতে আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর জোগাড় হয়ে গেছে। তেলের দামই উঠছে না আমাদের। যাত্রী না পেয়ে গতিধারার সমস্ত গাড়ি বসে গেছে। অরুপবাবুর দাবি ইতিমধ্যে একটি গাড়িকে ব্যাঙ্ক ইএমআই পরিশোধ না করতে পারায় টেনে নিয়ে গেছে। অরুপবাবু আরো বলেন, ‘আমরা স্ত্রীর গহনা বেচে গতিধারার গাড়ি কিনেছি। এখন দেখছি গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি কেনায় ভুল হয়ে গেছে। আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেল। আমরা দুর্গাপুরের এআরটিও কে ফের পাঁচটি নতুন রুট দিয়েছি কিন্তু এখনও সেই বিষয়ে কোন সদুত্তোর পাইনি।’ অরুপ বাবু আরও বলেন, ‘প্রশাসন যদি আমাদের বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেয় তা হলে দুর্গাপুর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনির্দিস্ট কালের অবস্থান করা ছাড়া আমাদের কোন উপায় আর নেই।’
দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ,গতিধারার গাড়ি চালকদের সঙ্গে রুট নিয়ে আলোচনা করেই রুট দেওয়া হয়েছে। এখন এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাছাড়া বিষয়টি আইনগত ভাবে দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের নয়। আরটিও’র। আমি গতিধারার গাড়ি চালকদের অভিযোগ পেয়ে আরটিওকে সব জানিয়ে দিয়েছি। গতিধারা নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেবার আরটিওই নেবেন।’