দুর্গাপুরের বেঙ্গল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির তৃতীয় বর্ষের দুই ছাত্র চন্দন গোপ ও দীপায়ন নন্দী ‘অ্যান্টি রিগিং ভোটিং মেশিন’ (এআরভিএম) তৈরি করে সাড়া ফেলে দিল। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশভর যখন বর্তমানে চালু ইভিএম মেশিন হ্যাক করা নিয়ে চরম বিতর্ক চলছে তখন বেঙ্গল কলেজের তৃতীয় বর্ষের দুই ছাত্রের তৈরি করা অ্যান্টি রিগিং ভোটিং মেশিন আবিষ্কার রাতারাতি রাজনৈতিক মহলেও চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার বেঙ্গল কলেজ কর্তৃপক্ষ চন্দন ও দীপায়নের তৈরি ভোটিং মেশিন সাংবাদিকদের দেখিয়ে তার কার্যকারিতা ব্যাখা করেন। কলেজ পড়ুয়া চন্দন ও দীপায়নের দাবি নির্বাচনের সময় এই মেশিনে ভোট নেওয়া হলে কোন ভাবেই ছাপ্পা ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। এতে যে এপিক ব্লক করে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে তাও দেখান চন্দন ও দীপায়ন। তাঁদের তৈরি ভোটিং মেশিন দেখাতে গিয়ে চন্দন বলেন, ‘এই মেশিনের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সময় মেশিনের কি-বোর্ডের মাধ্যমে এপিক নম্বর দিতে হবে। তা টাইপ করে সাবমিট করা হলে ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ চাইবে মেশিন। ছাপ মিললে তবেই ভোটিং মেশিন অন হবে নচেৎ নয়। অন্য কারও এপিকে ভোট দিতে এলে আঙ্গুলের ছাপ না মিললে কার্ড মেশিনে ব্লক হয়ে যাবে।’ চন্দনের দাবি, এই ভোটিং মেশিনের সাহায্যে নির্বাচনে ছাপ্পা ও অতিরিক্ত ভোট দেওয়া বন্ধ করা সম্ভব।

২০ ও ২১ জানুয়ারি দিল্লীতে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন(এআইসিটিই) আয়োজিত ছাত্র বিশ্বকর্মা অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১১৫ টি প্রজেক্টের মধ্যে এই মেশিন দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বলে জানান মেশিনের আবিষ্কার করা চন্দন ও দীপায়ন। বেঙ্গল কলেজের অধ্যাপক সমীর বসাক বলেন, ‘আমাদের কলেজের দুই ছাত্র এআরভিএম তৈরি করেছে। সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় তা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। এই মেশিন আজকের দিনে দেশের সেবায় খুবই উপযোগী হবে। চন্দন ও দীপায়নের সাফল্য অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের আগামী দিনে উৎসাহিত করবে।’ চন্দন ও দীপায়নের তৈরি মেশিন দেশের নির্বাচন কমিশন স্বীকৃতি দেবে কিনা তা সময় বলবে কিন্তু বেঙ্গল কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনই তা পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে নিজেদের কলেজের হস্টেলের নির্বাচনে ব্যবহার করবেন বলে জানিয়েছেন। বেঙ্গল কলেজের প্রশাসনিক প্রধান বিপ্লব বসু ঠাকুর বলেন, ‘আমাদের কলেজের হস্টেলের নির্বাচন ও স্থানীয় কলেজগুলির নির্বাচনে এই মেশিন ব্যবহারের চেষ্টা করা হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ছাত্র বিশ্বকর্মা অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় ‘আউটস্ট্যান্ডিং স্টুডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স’ ক্যাটেগরিতে দুর্গাপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের চার ছাত্রীর তৈরি করা ‘পাওয়ার জেনারেশন বাই ফুট স্টেপ’ প্রজেক্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার পায়। বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ‍্যাপকের নেতৃত্বে জাগৃতি জয়সোয়ার, অঞ্জলি কুমারি গুপ্তা, রীতু কুমারি ও সীমা রায় চাপশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করার এই প্রজেক্ট তৈরি করে বিচারকদের নজর কেড়েছিলেন।



Like Us On Facebook