একটা সময় ছিল যখন দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের ডিএসপি মেন হাসপাতালে কারখানার কর্মী বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভর্তি করতে একটি মাত্র ফোনেই ডিএসপি কর্মীদের বাড়িতে পৌঁছে যেত ডিএসপি কারখানা কর্তৃপক্ষের অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতালের ক্যাম্পাসে অ্যাম্বুলেন্সের নির্দিষ্ট ঘরে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকত হাসপাতালে রোগী আনবার জন্য। প্রয়োজন হলেই ডিএসপি কারখানার কর্মীদের এক ফোনেই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রোগী আনতে দ্রুত পৌঁছে যেত ডিএসপির অ্যাম্বুলেন্স। ডিএসপির কর্মীদের ও তাঁদের পরিবারকে নিখরচায় পরিষেবা দেওয়াই ছিল আসল উদ্দেশ্য।
কিন্তু গত প্রায় দু’বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেন হাসপাতালে রোগী ভর্তি বা রোগীদের ছুটি করিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে গেলে প্রয়োজনে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ কোন অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দিচ্ছে না। ফলে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্মী ও তাঁদের পরিবার বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন। অ্যাম্বুলেন্স রাখার জায়গা এখন অন্যান্য গাড়ি রাখার জায়গায় পরিণত হয়েছে। ডিএসপি কারখানার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ইতিমধ্যে এই বিষয়ে বার বার ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন করেও কোন সাড়া না পেয়ে কার্যত হতাশ। অথচ ডিএসপি হাসপাতালের বাইরে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে। ভুক্তভোগীরা পরিজনদের কথা চিন্তা করে চড়া ভাড়া দিয়ে বেসরকারি ওই অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয় বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বলেন, ‘আমরা শ্রমিক কর্মচারীদের কথা ভেবে বহুবার ডেপুটেশন দিয়েছি ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে ফের বিনামূল্যের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করার জন্য অনুরোধ করেছি কিন্তু ডিএসপি কর্তৃপক্ষের কোন হেলদোল নেই।’ আইএনটিটিইউসির ডিএসপি ইউনিটের সহ-সম্পাদক স্নেহাশিস ঘোষ বলেন, ‘ডিএসপি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা ফের চালু ও হাসপাতালের পরিষেবা উন্নয়ন করতে বহুবার ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে বলেছি কিন্তু ফল হয় নি।’ শ্রমিক সংগঠনগুলির মতো ডিএসপি কর্মীরাও অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করার দাবি জানান।
এদিকে, ডিএসপি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বন্ধ থাকায় প্রয়োজনের সময় ডিএসপি কারখানার কর্মীদের চড়া ভাড়ায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিতে হচ্ছে। ফলস্বরূপ, ডিএসপি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের মালিকরা মোটা টাকার বিনিময়ে রোগীদের পরিবহণ পরিষেবা দিয়ে দিনদিন ফুলে ফেঁপে উঠছে।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?