বিল মেটাতে না পারায় ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কোভিডে মৃতের নাম সরকারি পোর্টালে না তোলা এবং মৃতদেহ না দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মৃতের বাড়ির লোকজন দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। মহকুমাশাসক বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা গেছে, ৩১ মে ভোরে দুর্গাপুরের বামুনাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় সোনামুখীর বাসিন্দা উমারানী বারুইয়ের। গত ১২ মে কোভিড আক্রান্ত হয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর পর হাসপাতাল কতৃপক্ষ ৯ লক্ষ টাকার একটি বিল ধরায়। এই টাকা দিতে সমর্থ না হওয়ায় হাসপাতাল কতৃপক্ষের সাথে আলোচনার পর ৪.৫ লক্ষ টাকায় রফা হয়। পরিবার সেইমত টাকা দিয়েও দেওয় হয়। গতকাল ৩১ মে সন্ধ্যায় মৃতদেহ পরিবারকে দেওয়ার কথা জানানো হয় কতৃপক্ষের তরফে। মৃতার ছেলে অতনু বারুই সেইমত হাসপাতালে গেলে নানা টালবাহানায় কতৃপক্ষ মৃতদেহ দিতে অস্বীকার করে। আজ ১ জুন সকাল ১০টায় হাসপাতালে আসতে বলে। পরিবারের অভিযোগ, এদিন সকালে গেলেও পুরো টাকা না পেলে মৃতদেহ ছাড়া হবে না বলে জানায় হাসপাতাল কতৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই ছেলে অতনু বারুই স্থানীয় মলানদিঘি ফাঁড়ি ও দুর্গাপুর মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হন। সেই সময়ই মৃতার পরিবার জানতে পারে যে সরকারি ভাবে পোর্টালে মৃতার কোন তথ্যই নেই, অথচ নিয়ম মাফিক কোভিডে মৃত্যু হলে সরকারি পোর্টালে তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক। কারণ এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই মৃতদেহ সৎকারের ব্যাবস্থা করে প্রশাসন।
পরিবারের আরও অভিযোগ, পুরো টাকা পায়নি বলে হাসপাতাল মৃত্যুর ঘটনা চেপে যাচ্ছে। এবং মৃত্যুর পর ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও চরম হয়রানির শিকার পরিবার। মৃতার ছোট ছেলে তন্ময় বারুইয়ের অভিযোগ, টাকার পরিমাণ নিয়ে মিটমাট হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ দিতে টালবাহানা করছে। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
যদিও হাসপাতাল কতৃপক্ষ দেহ আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ওই বেসরকারি হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অভিষেক চ্যাটার্জী জানান, ৯ লক্ষ টাকার মধ্যে ২ লক্ষ টাকা বিল মকুব করা হয়েছে, তা সত্বেও মৃতার পরিবার দেহ নিতে আসে নি।