প্রার্থী তালিকা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম আকার নিল দুর্গাপুরে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া কাউন্সিলর সহ অনেক নেতা দুর্গাপুর পৌর নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের আসানসোল নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে কার্যত দলের শীর্ষনেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ৩৮ নং ওয়ার্ডের বিগত বোর্ডের পুরপিতা অরবিন্দ নন্দীর পথ অনুসরণ করেই বুধবার নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের দপ্তর থেকে অনেক বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর মনোনয়ন পত্র তোলেন।
এদের মধ্যে ৯ নং ওয়ার্ডের বিগত বোর্ডের কাউন্সিলর পল্লব কান্তি নাগ ও ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ২নং বোরো চেয়ারম্যান নিমাই গড়াই, ২১ নং ওয়ার্ডের চন্দন সাহা ও ৩৩ নং ওয়ার্ডের হীরালাল বাউরি রয়েছেন। বুধবার প্রাক্তন কাউন্সিলররা নির্বাচন পরিচালনায় দুর্গাপুরের তৃণমূলের কাউন্সিলরদের প্রার্থী না করায় দলীয় কর্মীদের আবেগকে ছোট করেছে আসানসোল নেতারা বলে অভিযোগ তুলে এবং আসানসোলকে জেলার সদর করে দুর্গাপুর বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কার্যত তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দলের টিকিটে গোঁজ প্রার্থী দিতে বুধবার মনোনয়ন পত্র তোলেন।
তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও বিক্ষুদ্ধ নেতা পল্লব নাগ ও ২ নং বোরো চেয়ারম্যান নিমাই গড়াই এর অভিযোগ দুর্গাপুর গড়ার জন্য তৃণমূলের ফাউন্ডার মেম্বার অপূর্ব মুখার্জী, প্রভাত চট্টোপাধ্যায় সহ আমাদের দুর্গাপুরের অনেক পুরানো কর্মীদের অবদান যথেষ্ট। তখন আসানসোলের নেতারা তৃণমূলেই ছিলনা। অথচ দুর্গাপুরকে সব দিক দিয়েই বঞ্চিত করে এই সব নেতারা নিজেদের স্বার্থ গুছাতে এখন দুর্গাপুরের তৃণমূলের আসল কর্মীদের বঞ্চিত করছে। বিক্ষুব্ধ নেতারা প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন এদিন। দুর্গাপুর তৃণমূল কংগ্রেসের শিল্পাঞ্চল সভাপতি উত্তম মুখার্জী বর্ধমান ডট কমকে দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের নির্দলের টিকিটে গোঁজ প্রার্থী হওয়া নিয়ে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শীর্ঘ্রই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। উত্তমবাবু বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের উপর কেউ নয়। দল যাকে ভাল বুঝেছে তাকে প্রার্থী করেছে। এর বিরুদ্ধে যারা যাবে দল তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে।’ রাজনৈতক ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনে শাসক দলের কাছে বিরোধী শিবির নয়, এখন গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে দলের বিক্ষুদ্ধ গোঁজ প্রার্থীরাই।