করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে চলছে কার্যত লকডাউন। সমস্যায় দুর্গাপুরের কিন্নর-রা। সোনার গয়না বেচে কোন মতে দিন গুজরান করছেন তাঁরা। পরিবারে নবজাতক এলে আনন্দে শরিক হন ওরা। গান গেয়ে নবজাতকের জীবন এবং তার পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা কামনা করেন ঈশ্বরের কাছে। এটাই তাঁদের পেশা। কিন্তু করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে তাঁদের রোজগার।
রাজ্য সরকারের খাদ্য দফতরের গণবণ্টন ব্যবস্থায় রেশনের মাধ্যমে যৎসামান্য খাদ্য সামগ্রী পাওয়া গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এমন অবস্থায় বেচতে হচ্ছে বিভিন্ন পরিবারের কাছ থেকে উপহার স্বরূপ পাওয়া সোনার গয়না। সম্প্রদায়ের প্রধান নাগেশ্বরী কিন্নর জানান, প্রথমবারের লকডাউনে জমানো টাকা দিয়ে ১৬ জনের পেট চলেছে ঘরে বসেই। ভাবতে পারিনি দ্বিতীয়বারের জন্য লকডাউন ঘোষণা হবে। এমন অবস্থায় বাধ্য হয়ে দু’ভরি সোনা বিক্রি করতে হয়েছে সংসার চলাতে। সরকারের দেওয়া সামান্য রেশন দিয়ে দু’বেলা পেট ভরে খাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪১নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রগতি পল্লীতে প্রায় ১৬ জন কিন্নরের বসবাস। স্থানীয়দের কাছে যা ‘নাগেশ্বরী কিন্নর’ সম্প্রদায় নামে পরিচিত। গুরু মাতা নাগেশ্বরী-র নাম অনুসারে সম্প্রদায়ের নামকরণ। সম্প্রদায়ের সদস্য সোনালী কিন্নর জানান, বাচ্চা নাচানো আমাদের কাজ। কিন্তু সোশ্যাল ডিসট্যান্স মানতে গিয়ে কাজ বন্ধ। ভ্যাকসিন কবে হবে জানা নেই। সহৃদয় ব্যক্তির এবং সংস্থার সাহায্য ছাড়া চলা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
এমন অবস্থায়, কিন্নর সম্প্রদায়ের সমস্যার কথা শুনে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে দুর্গাপুরের ‘ওম সাঁই রাম ট্রাস্ট’। ট্রাস্টের সদস্য পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মহামারীর সময় বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য করছেন। তাঁদের কিন্নরদের কথা চিন্তা করা উচিত। সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা ট্রাস্টের তরফ থেকে করা হয়েছে।