শুক্রবার রাতে কলকাতা থেকে ফিরে শনিবার সকালে ফের বঙ্গধ্বনি কর্মসূচি এবং নিজের এলাকায় জনসংযোগে মনযোগী হলেন দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। শনিবার সকাল থেকে তিনি বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন। প্রতিদিনের মতো শনিবারও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে উদ্যগী হন। জানা গেছে, শুক্রবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রীর ডাকে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল কলকাতা যান। কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ম্যানেজার পিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের শীর্ষস্থানীয় বেশকিছু নেতা এবং বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের মধ্যে এক একান্ত বৈঠক হয়। এবং সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ সফররত দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের কথা হয় বলে জানা গেছে। সেখানেই বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের কাজ করতে গিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যার সমস্ত কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং আগের মতই বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে স্বাধীন ভাবেই নিজের কাজ করা এবং স্থানীয় যুবকদের স্থানীয় কলকারখানায় চাকরির সুযোগ করে দিতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জেলা শ্রমিক সংগঠনের হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন দলনেত্রী বলে জানা গেছে। দল সমস্যার সমাধান উদ্যোগী হওয়ার জন্য কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট হন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।
এই বিষয়ে দুর্গাপুরে ফিরে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বর্ধমান ডটকমকে বলেন, ‘শুক্রবার দিদির ডাকে কলকাতা গিয়েছিলাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয়ে কথা হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ছিলেন ভোট ম্যানেজার পিকে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। বৈঠকের মধ্যে উত্তরবঙ্গ সফররত দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। আমার কথা শুনে সমস্যা সমাধানে নির্দেশ দিয়েছেন দিদি। এখন দেখার কতটা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় আমার দাবি থেকে। উল্লেখ্য, তিনদিন আগে দুর্গাপুরে গ্রাফাইট ইন্ডিয়ার গেটের সামনে শ্রমিকদের স্বার্থে জনসভায় জেলা শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি হিসেবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পেরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। বিশ্বনাথ পাড়িয়াল সেদিনের সভায় অভিযোগ করেছিলেন দল তাঁকে জেলার শ্রমিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার পর কিছু নেতাকে গোঁজ হিসেবে গুঁজে দেওয়ায় কাজ করতে না পারার অভিযোগ করেছিলেন। বার বার অভিযোগ করা সত্ত্বেও দল কোনরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে না তাই প্রয়োজনে দলের সমস্ত উচ্চপদ ত্যাগ করে দলের একজন সাধারণ অনুগত সৈনিক হিসেবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।
এদিকে শনিবার হঠাৎ শহরে রটে যায় বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বিজেপিতে যোগদান করছেন। এই প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বলেন, ‘আসলে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি গোষ্ঠী আসরে নেমে পড়েছে। আমি কখনও দলত্যাগের কথা বলিনি। আমি শুধু কাজে যারা বাধা দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি। দিদি এবং দলের উচ্চ নেতৃত্ব আমার কথা শুনেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। আর এখানে ভুল খবর রটনা করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করে আমাকে ম্যালাইন করার জন্য এইসব গুজব রটাচ্ছে।’