ভাতাড় থানার এড়ুয়ার উদয়াচল ক্লাবের মহিলা ফুটবল দলের ১৫ জন সদস্যাকে সিভিক ভলাণ্টিয়ারের চাকরি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে শনিবার কালীপুজোর দিন ভাতাড় থানায় কাজে যোগ দিলেন ৫জন – সোমা মণ্ডল, সাবিনা খাতুন, নূরজাহান খাতুন, ছন্দা মাঝি এবং মন্দিরা বাগ। বাকি ১০ জনের বয়স এখনও ১৮ না হওয়ায় তাঁরা নিয়োগের অনুমতি পেলেও বয়সজনিত কারণে তাঁরা যোগ দিতে পারলেন না।
উদয়াচল ক্লাবের সদস্য মানগোবিন্দ অধিকারী জানিয়েছেন, আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগে এই মেয়েদের দেখে তাঁর মনে হয়েছিল এরা একদিন ভাতাড়ের মুখ উজ্জ্বল করবে। আর তারপর থেকেই খেটে খাওয়া পরিবারের এই ১৫ জন মেয়েকে নিয়ে তিনি এবং ক্লাবের কয়েকজন সদস্য নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। ২০১৯ সালের জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত রাঙামাটি উৎসবে বর্ধমানের কালনা দলের কাছে হেরে গিয়ে রানার্স হয় তাঁরা। মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, এই মেয়েদের অনেকেই মণিপুর সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে। কয়েকজন জাতীয়স্তরেও খেলেছেন।
এদিন সিভিক ভলাণ্টিয়ারের কাজে যোগ দেওয়া সোমা মণ্ডল এবং ছন্দা মাঝিরা পড়া ছেড়ে দিলেও নূরজাহান, মন্দিরা এবং সাবিনারা গুসকরা কলেজের বিএ প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন। বাকিরা সকলেই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এবং ফুটবলের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, এই মেয়েদের প্রত্যেকেরই পরিবার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। খেলাধূলা করা কার্যত বিলাসিতাই। কিন্তু তিনি এবং তাঁরা হাল ছাড়েননি। তিনি জানিয়েছেন, বাকি ১০ জন মেয়ের বয়স ১৮ ছুঁতে কয়েকমাস বাকি আছে। তাঁদের বয়স ১৮ হলেই তাঁরাও সিভিক ভলাণ্টিয়ারের কাজে যোগ দেবেন। কার্যত গোটা জেলার মধ্যে রীতিমত নজীর এই ঘটনা সম্পর্কে প্রদেশ যুব তৃণমূল কোর কমিটির অন্যতম সদস্য শান্তনু কোঁয়ার জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে সকলের জন্য ভাবেন তাঁদের পাশে দাঁড়ান আবারও তা প্রমাণিত হল। তিনি জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যের মধ্যে ভাতাড়ের এই ঘটনা নজীর সৃষ্টি করল। কার্যতই দীপাবলীর রাতে ভাতাড়ের এড়ুয়ার গ্রামের ১৫টি বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে জ্বলে উঠল খুশী আর আনন্দের বাতি।