মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় দামোদরে জল ছাড়ার ঘটনায় দামোদরের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে শুরু করেছিল বুধবার সকাল থেকেই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার মোহনপুর,অমরপুর, নিশ্চিন্দপুর, কাড়ালাঘাট প্রভৃতি এলাকা। খবর পেয়ে এদিন দুপুরেই বাঁধের পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু সহ জনস্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ গার্গী নাহা, বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার সহ একাধিক আধিকারিকরা। বুধবার সকালেই বাঁধের ফাটল দিয়ে জল গ্রামে ঢুকতেই গ্রামবাসীরাও এগিয়ে এসেছিলেন বাঁধ মেরামতিতে। খবর দেওয়া হয়েছিল সেচ দপ্তরকেও। চলছিল বালির বস্তা দিয়ে আপদকালীন বাঁধ মেরামতির কাজও।
এদিন বিকাল নাগাদ সভাধিপতি যখন বর্ধমান হুগলীর সীমান্ত এলাকা নিশ্চিন্দপুরের বাঁধ মেরামতির কাজ দেখতে যান তখন কয়েক হাজার গ্রামবাসী সেখানে দাঁড়িয়ে। উল্লেখ্য, এখানেই দামোদরের লাগোয়া রয়েছে মুণ্ডেশ্বরী নদী। এই দুই নদীর মধ্যবর্তী কৃষি এলাকা দামোদরের জলে প্লাবিত হওয়ায় সকাল থেকেই গ্রামবাসীরা ক্ষীপ্ত হয়েছিলেন। আর হাতের কাছে সভাধিপতি সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের পেয়ে এদিন ক্ষীপ্ত গ্রামবাসীরা তাঁদের ঘেরাও করেন। গ্রামবাসীরা এদিন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা দামোদরের বাঁধের দুর্বল অবস্থা এবং বিপদের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো সুরাহা মেলেনি। ফলে আজ যখন দামোদরের বাঁধ ভেঙে প্রায় ৪টি গ্রামের কৃষিজমি প্লাবিত তখন আধিকারিকরা এসেছেন বাঁধের অবস্থা দেখতে।
অপরদিকে, এদিনই দামোদরে জলে প্লাবিত হয়েছে রায়না-২ এর উচিতপুর, গুণোর, আনগুনা প্রভৃতি গ্রাম। দামোদরের জলে ভেসে গেছে মূল সড়কপথ। এরই পাশাপাশি এদিন বর্ধমান জেলার সঙ্গে হুগলী, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর সহ বেশ কয়েকটি জেলার সঙ্গে যোগাযোগকারী দামোদর নদের ওপর কৃষক সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় এদিন সকাল থেকেই প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছে। এদিন সকালেই জেলাশাসক সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা কৃষকসেতু পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ)নিখিল নির্মল জানিয়েছেন,পূর্ত দপ্তরকে দ্রুত ব্রীজ মেরামতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, জেলাশাসক এদিন জানিয়েছেন, দামোদর, অজয় ও ভাগীরথীতে জলের পরিমাণ বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার থেকেই গোটা জেলায় লাল সতর্কতা জারী করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ এদিন রাতের মধ্যে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।