কয়েকদিন ধরে নিজের স্ত্রী ও মেয়ে তাকে যেকোনো সময় মেরে ফেলতে পারে এই আশঙ্কা করেছিলেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা এসএমএস বিভাগের কর্মী জেমস থমাস। আশঙ্কার কথা কারখানার সহকর্মীদের জেমস বার বার বলতেন বলে জানা গেছে। রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশের উদ্দেশ্যে নিজের দিদি রাচেলকে এক হোয়াটস অ্যাপ মেসেজে স্ত্রী শার্লি ও মেয়ে আনুষাকে নিজের মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করে যান ডিএসপির ওই কর্মী। এরপর স্টিল টাউনশিপের দয়ানন্দ রোডের কোয়ার্টার থেকে সোমবার ভোর রাতে জেমসের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এই রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপ জুড়ে সোমবার সারাদিন চাঞ্চল্য ছড়াল। সোমবার ভোরে জেমস থমাসের পরিবার জেমসের মৃতদেহ উদ্ধার করে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ জেমসের পকেট থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। ওই চিঠিতে জেমস তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন বলে পুলিশের দাবি।
যদিও জেমসের দিদি রাচেল ভাই এর মৃত্যুর জন্য জেমসের স্ত্রী শার্লি ও মেয়ে আনুষাকে সরাসরি দায়ী করেছেন। রাচেল পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, জেমসের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী শার্লি ও মেয়ে আনুষার সম্পর্ক ভালো ছিল না। মনোমালিন্যের জেরে পারিবারিক অশান্তি চরমে পৌঁছেছিল। জেমসের মেয়ে আনুষার সঙ্গে একটি ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই আনুষার বিয়ের জন্য গহনা কিনতে বাজার থেকে ধার করে গহনা কিনতে চাপ দেয়। জেমস রাজি না হওয়ায় অশান্তি চরমে পৌঁছয়। রাচেলের দাবি শার্লি, আনুষা ও আনুষার প্রেমিক মিলে জেমসকে মেরে ফেলেছে। পুলিশও সন্দিহান এই রহস্য মৃত্যু নিয়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেমসের ঘাড়ের দুই দিকে সন্দেহজনক দাগ ও বাঁ হাতে ক্ষত পাওয়া গেছে। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জেমসের দিদি রাচেল ও স্ত্রী শার্লিকে একপ্রস্থ জেরা করেছে বলে খবর। জেমসের স্ত্রী শার্লি তাঁর দিকে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামীর মৃত্যুর জন্য অত্যাধিক মদ্যপানকেই দায়ি করেছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ সন্দেহ নিরসনের জন্য মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে সোমবার পাঠায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই জেমসের মৃত্যুর ধোঁয়াশা কাটবে বলে পুলিশের ধারণা।