এ যেন উলট পুরাণ। একসময় বিরোধীরা পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে থানায় থানায় অবস্থান বিক্ষোভ করত। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনোত্তর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা পুলিশকে বিরোধী দলের নির্দেশে কাজ করার অভিযোগে বার বার থানা ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হচ্ছে। দুর্গাপুরের ফরিদপুর থানার পর দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানায় পুলিশ বিজেপির হয়ে কাজ করছে এই অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা বুধবার থানার সামনে রীতিমত শ্লোগান দিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করল। এই ঘটনায় দুর্গাপুর শহরে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়।
ঘটনার সূত্রপাত দুর্গাপুরের ২৩ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত এমএএমসির বি-টু এলাকায়। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁইয়ের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের এক বুথ কর্মী জয়দেব ধীবরকে বিজেপি কর্মীরা জোর করে দল বদলের জন্য চাপ দিচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরে। জয়দেব বিজেপিতে যোগদানে রাজি না হওয়ায় তাকে মঙ্গলবার রাতে একদল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতি বেধড়ক মারধর করলে আহত জয়দেবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিউ টাউনশিপ থানায় অভিযোগ জানানো হলেও অভিযুক্ত বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না। দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, বিজেপি দুর্গাপুরের সর্বত্র অশান্তি সৃষ্টি করছে। এখন ২৩ নং ওয়ার্ডেও বিজেপি ফের অশান্তি সৃষ্টি করছে। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘পুলিশ যাতে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার জন্য আমরা নিউ টাউনশিপ থানায় অবস্থান বিক্ষোভ করলাম।’
তৃণমূল কংগ্রেসের আর এক নেতা শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সিপিএমের সমস্ত দুষ্কৃতীরা এখন বিজেপির ছাতার তলায় আশ্রয় নিয়ে দুর্গাপুরে অশান্তি সৃষ্টি করছে। শান্ত দুর্গাপুরে অশান্তি সৃষ্টি করতে আমরা দেব না। তাই পুলিশ যাতে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাই থানায় আমরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করলাম।’ শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘অবিলম্বে পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার না করলে আমরা দুর্গাপুরে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।’
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ খন্ডন করে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের পর শাসকদল জন সমর্থন হারিয়েছে। পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে এত কুৎসা রটাচ্ছে। এমনকি পুলিশ নিরপেক্ষ কাজ করলেও শাসকদলের নেতারা চোখে এখন সর্ষে ফুল দেখে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে পুলিশকেও।’
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?