আর পাঁচটা শিশুর মত দু’হাতে দশটি স্বাভাবিক আঙুল নিয়ে ১৯৯৭ সালে জন্ম নিয়েছিল দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গীর ঈশিতা মহাপাত্র। দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার হাসপাতালে চিকিৎসা বিভ্রাটের শিকার হয়ে জন্মের কয়েক দিন পরেই ঈশিতার ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে বাদ দিতে হয়। ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে ডান হাতের আঙুল খুইয়ে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ঈশিতা এখন দুর্গাপুর গভর্ণমেন্ট কলেজের কর্মাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

সম্প্রতি দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতাল আইকিউ সিটি হাসপাতালে তপন বাউরি নামের এক রোগীর হাতে তৈরি করা স্যালাইন চ্যানেলে ইনজেকশন দেওয়ার পর আঙুলে গ্যাংগ্রিন হয়ে হাত বাদ যেতে বসেছে এই খবর শুনে বর্ধমান ডট কমকে প্রতিক্রিয়া দেয় ঈশিতা। ঈশিতা বলে, ‘শুধু বেসরকারি নয়, সরকারি হাসপাতালেও কিছু স্বাস্থ্য কর্মীর অদক্ষতার ফলে রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।’ ঈশিতা আরও বলে, ‘আমার তখন মাত্র কয়েকদিন বয়স। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে ব্লাড দেওয়ার জন্য দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার হাসপাতালে ভুল পদ্ধতিতে চ্যানেল তৈরি করায় সংক্রমণ হয় আমার ডান হাতে। এর ফলে আমার চারটি আঙুল কেটে বাদ দিতে হয়। কিন্তু তখন সেভাবে প্রতিবাদ করতে পারেনি আমার পরিবার, কারণ অর্থবল ও লোকবল কোনটাই সেই সময় আমাদের ছিল না। স্বাভাবিক ভাবে আমি চিকিৎসা বিভ্রাটের শিকার হয়ে পড়ি।’ একই কথা বলেন ঈশিতার বাবা-মা সুব্রত ও কাকলি মহাপাত্র। কাকলিদেবী আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে এখন লেখা, ছবি আঁকা সহ কম্পিউটার চালায় বাঁ হাত দিয়েই। বহু প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ঈশিতা এখন দুর্গাপুর গভর্ণমেন্ট কলেজে অ্যাকাউন্টেন্সি অনার্স নিয়ে পড়ছে।’ কাকলিদেবীর দাবি সরকার অবিলম্বে অভিযান চালিয়ে অদক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে চিকিৎসা বন্ধ করুক।

দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘খুব শীঘ্রই আমরা অভিযান চালাব শহরের প্রতিটি নার্সিং হোম ও হাসপাতালে। সরকারি গাইড লাইন মেনে চিকিৎসা না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

১৯৯৭ সালে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের কাটিং…

Like Us On Facebook