দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা সুগারে আক্রান্ত হত দরিদ্র চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া রুমকির চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন দুর্গাপুরের বেসরকারি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল আইকিউ সিটি হাসপাতালে। সোমবার অসুস্থ রুমকির মা পারুল রাও, রুমকির দিদি চুমকি বিশ্বাস ও রুমকির পড়শিরা ও পরিবারের সর্বক্ষণের সঙ্গী কাকলি গুহ দুর্গাপুর মহকুমাশাসকের কাছে রুমকির শারীরিক ও পারিবারিক দুরবস্থার কথা জানালে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা রুমকির চিকিৎসা ও পারিবারিক স্বচ্ছলতার জন্য সমস্ত প্রশাসনিক সাহায্যের অঙ্গীকার করেন।
মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা রুমকির পাশে দাঁড়াতেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও রুমকির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেয় মহকুমাশাসককে।এদিন প্রথমে রুমকিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় কিন্তু দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা বেড না থাকার কথা জানিয়ে রুমকিদের বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ফের আসতে বলায় রুমকির পরিজনরা ফের মহকুমাশাসকের দারস্থ হয়ে রোগীর অবস্থার অবনতির কথা জানান। এর পরই মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা দুর্গাপুরের বেসরকারি আইকিউ সিটি হাসপাতালে রুমকির চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন।
জানা গেছে, দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪ নম্বর ওয়ার্ড স্টিল টাউনশিপ নাগার্জুনের বাসিন্দা পারুল রাও-এর ছোট মেয়ে রুমকি দুরারোগ্য মধুমেহ রোগে আক্রান্ত।রুমকির কখনো কখনো সুগারের পরিমাণ ৫০০-৬০০ ছাড়িয়ে যায়, একে একে রুমকির বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গ নষ্ট হয়ে যাছে বলে রুমকির মায়ের দাবি। পারুলদেবীর স্বামীর কোন স্থায়ী কাজ নেই। পারুলদেবী প্রথমে আয়ার কাজ করতেন, সেই কাজও গেছে মেয়ের পরিচর্যার পিছনে সময় দিতে গিয়ে। বড় মেয়ে চুমকির বিয়ের পরই স্বামী দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর চুমকিও পারুলদেবীর সঙ্গে বাপের বাড়িতেই থাকে।
এদিকে বিপিএল কার্ড না থাকায় রেশন কার্ডের ২ টাকা কেজির চাল, গম থেকেও পারুলদেবীরা বঞ্চিত। চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে রুমকির ব্যয়বহুল চিকিৎসা এক বোঝা হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের কাছে। পারুল রাও-এর এক শুভাকাঙ্খী প্রতিবেশী কাকলি গুহ নিজে সাধ্যমতো সাহায্য করেও রুমকির ব্যয়বহুল চিকিৎসার আর্থিক সাহায্যের জন্য স্থানীয় কউন্সিলর, বিধায়ক থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির দুয়ারে দুয়ারে ঘোরেন বলে জানান কাকলি গুহ। কিন্তু সব প্রচেষ্টা বৃথা হতেই বুধবার কাকলিদেবী রুমকির মা ও দিদিকে নিয়ে দুর্গাপুর মহকুমাশাসকের দারস্থ হন। পারুলদেবী ও কাকলি গুহ মহকুমা শাসকের এই মানবিক মুখে কৃতজ্ঞতার কথা জানান।