কোন বাঁধ থেকে কত পরিমাণ জল ছাড়া হচ্ছে বা কোথায় কত পরিমাণ জল রয়েছে তার ‘রিয়েল-টাইম’ তথ্য জানতে চলতি বছরে দুর্গাপুর ব্যারেজে চালু হতে চলেছে অত্যাধুনিক মানের স্কাডা সেন্টার। স্কাডা বা সুপারভাইজারি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন সিস্টেমের তথ্যের ভিত্তিতে জল নিয়ন্ত্রণ হবে দুর্গাপুর ব্যারেজে। জল নিয়ন্ত্রণকে আরও সুচারু করতেই চালু করা হচ্ছে এই স্কাডা সেন্টার। আধুনিক বিতরণ ব্যবস্থায় স্কাডা (তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ এবং তথ্য অধিগ্রহণ) মনিটরিং একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম। এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে জলের চাপ, প্রবাহ ইত্যাদি বিষয়ের যাবতীয় খুঁটিনাটি ভেসে উঠবে ডিসপ্লে বোর্ডে এবং সেই মত দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।

কোন ড্যাম থেকে কত পরিমাণ জল ছাড়া হচ্ছে এই তথ্য জানতে এতদিন হয় ফোন অথবা হোয়াটস্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তথ্য পেতে হত সেচ দফতরের আধিকারিকদের। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে বদলে যাচ্ছে পুরো ছবিটা। স্কাডা সেন্টারের মাধ্যমে এবার এক জায়গায় বসেই মনিটরিং করা যাবে জল ছাড়ার পরিমাণ, কতগুলো গেট থেকে জল ছাড়া হচ্ছে, মাঝপথে বৃষ্টির দরুণ যদি কোন বাঁধ থেকে জল ছাড়তে বাধ্য হতে হয় তাহলে তার পরিমাণ কত, কোন বাঁধের কত নম্বর গেট থেকে কত জল ছাড়া হচ্ছে সেই তথ্যও মিলবে এই স্কাডা সেন্টারে।

দুর্গাপুর ব্যারেজে গত বছর থেকে এই স্কাডা সেন্টারের কাজ শুরু হয়েছিল, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যায় করে এই স্কাডা সেন্টার শুরু হতে চলেছে দুর্গাপুরে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে যাবে এই স্কাডা সেন্টারের কাজকর্ম। মাইথন, পাঞ্চেত বা দুর্গাপুর ব্যারেজ যেখান থেকেই জল ছাড়া হোক না কেন আগাম তথ্য যেমন ফোনে দেওয়া হত তেমনই থাকবে, সাথে থাকবে হোয়াটস্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান, কিন্তু এতদিন মাঝপথে কোথাও বৃষ্টি হলে সেই তথ্য পাওয়া সম্ভব ছিল না, এখন যার ফলে জলের পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যেত না, এর ফলে জলের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে প্লাবিত হয়ে যেত এলাকা, তৈরী হত বন্যা পরিস্তিতি, ক্ষতি হত মানুষের, আর এবার স্কাডা সেন্টার তাৎক্ষণিক তথ্য দেবে মাঝপথে প্রবল বৃষ্টির জন্য জলের পরিমাণ বেড়ে গেলে।

সেচ দফতরের চিফ এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিং জানান, অত্যাধুনিক মানের এই মনিটরিং সিস্টেমে উপকৃত হবেন তাঁরা। একই সঙ্গে সেচ দফতরের এই আধিকারিক জানান, দুর্গাপুরের এই স্কাডা সেন্টার যাতে ভালো ভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য স্কাডা সেন্টারের কাজ শুরুর আগেই দুর্গাপুর ব্যারেজের এগারোটি গেট ধাপে ধাপে দ্রুততার সঙ্গে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে দুর্গাপুর ব্যারেজে অত্যাধুনিক মানের স্কাডা সেন্টারের কাজ শুরুর তৎপরতা শুরু হওয়ায় এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সেচ দফতরের আধিকারিকরা, কারণ জল ছাড়ার পরিমাণ নিয়ে খুঁটিনাটি সমস্ত তথ্য মিলবে এই স্কাডা সেন্টারের মাধ্যমে তাতে করে অত্যাধুনিক এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রিয়েল টাইমে তথ্য মিলবে। এতে সাধারণ মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।

Like Us On Facebook