ঔরঙ্গজেবের রাজত্বের শেষ পর্যায়ে বাংলায় বর্গী হামলার আগে বৃন্দাবন থেকে পায়ে হেঁটে আর নৌকা করে নিয়ে আসা হয়েছিল অষ্টধাতুর তৈরি গোপাল আর রাধারানীকে। তারপর দুর্গাপুরের গোপালপুরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। জমিদার নিমাই চট্টোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গোপালকে এবং সেই থেকে প্রায় ৪০০ বছর ধরে চলে আসছে গোপালপুরের রাস উৎসব। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের গোপালকে নিয়ে রাস পূর্নিমায় রাস উৎসবে মেতে ওঠেন গোপালপুর সহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষজন।

করোনা কাল চলছে, তৃতীয় ঢেউ আসবে আসবে করে এক ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাই রাস উৎসবে সরকারের কোভিড বিধি মেনে কিছুটা হলেও টান দিতে হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। তবে এখনও দশ থেকে বারো হাজার মানুষ গোপালের অন্নভোগ গ্রহণ করেন রাসের দিন। হয় পালা কীর্তনও। অধিবাস এবং নগর কীর্তনের মধ্য দিয়েই শুরু হয় রাস উৎসব। তবে প্রতিদিন গোপালকে ঘুম থেকে উঠিয়ে ফলাহার করানো হয়, পরে অন্নভোগ এবং সন্ধ্যায় আরতির সময় লুচি-মিষ্টান্নের ভোগ দেওয়া হয়। গোপালপুরের এই রাস উৎসবে প্রাচীন কালে বিখ্যাত পালা কীর্তন গায়ক এবং উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতগুরুরা এখানে অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন। গোপালপুরের রাস উৎসবে জ্ঞানপ্রকাশ গোস্বামী, রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, কবি নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায়, যামিনী রায় সহ অনেকেই গান পরিবেশন করেছেন। এখনও চট্টোপাধ্যায় পরিবারের রাস উৎসবে বিখ্যাত পালা কীর্তন গায়কেরা আসেন এবং অনুষ্ঠান করেন। রাস উৎসবের জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা।

Like Us On Facebook