নার্সিংহোম ও অ্যাম্বুলেন্সের উপর রাশ টানতে উদ্যোগ নিচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। দ্রুত এবিষয়ে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি বীরভূমের মাধ্যমিকের ছাত্র অরিজিত দাসের মৃত্যুর ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। যেভাবে জেলাজুড়ে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবায় একটি অসাধু চক্র গড়ে উঠেছে তাতে রাশ টানতেই এবার সরাসরি বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপও গ্রহণ করা হতে পারে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। একইসঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের হাতে প্রতারিত হওয়া এবং নার্সিংহোম গুলির সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের অশুভ আঁতাতের বিষয়টিও সামনে আসায় নার্সিংহোমগুলির উপরও এবার কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার পথেই এগোচ্ছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী এপ্রিল মাসেই পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ওই বৈঠকের আগেই কিভাবে অ্যাম্বুলেন্সের এই দাপট বন্ধ করা যাবে সে ব্যাপারে নক্সা তৈরির কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রোগীদের প্রতারিত করা ছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স চালক তথা মালিকরা রীতিমত অন্যায়ভাবেই রোগীদের অসহায়তার সুযোগে তাঁদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। এব্যাপারটিকেও অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল থেকে জনস্বার্থে দেওয়া বিভিন্ন অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবহার নিয়েও এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে। যেহেতু ওই সমস্ত সাংসদ ও বিধায়ক তহবিলের টাকায় জনস্বার্থে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সের মালিক হন পদাধিকারবলে জেলাশাসক। তাই জেলাশাসকদের এবিষয়ে মনিটরিং থাকাটাও জরুরী বলে অভিমত উঠে এসেছে। এমনকি খোদ জেলাশাসকও জানিয়েছেন, বিগত ১০ বছরের এই সংক্রান্ত হিসাব নিকাশ তিনি জানতে চেয়েছেন। অর্থাৎ বিগত ১০ বছরে সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল থেকে কতগুলি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে? কাদের দেওয়া হয়েছে? বর্তমানে সেগুলির হালহকিকত কি? যাবতীয় তথ্যই জেলা পরিবহণ দপ্তরের কাছে জানতে চেয়েছেন জেলাশাসক।
উল্লেখ্য, অরিজিত দাসের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বুলেন্স চালককে গ্রেপ্তার করেছে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের দুই মালিক এবং এসি মেশিনের টেকনিশিয়ানকেও গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্য একটি নার্সিংহোমের টেকনিশিয়ানকেও। যদিও এই অ্যাম্বুলেন্সের অসাধু চক্রের মূল পাণ্ডা বিকিকে এখনও পুলিশ ধরতে পারেনি।