পুলিশের তোলাবাজির বিরুদ্ধে সরব হয়ে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক পুলিশ কর্মী ও পুলিশের গাড়ির চালককে বেধড়ক গণপিটুনি দিল উত্তেজিত জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সাত সকালে দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোর রাতে মেদিনীপুরের ময়না এলাকার একটি মাছের গাড়ি বেনাচিতির মাছের বাজারে আসছিল। ভোর বেলায় মাছের গাড়ি দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে পৌঁছলে নিউ টাউনশিপ থানার একটি পুলিশ গাড়ি ওই মাছের গাড়িটিকে আটকে ৫০০ টাকা তোলা চায় বলে অভিযোগ মাছের গাড়ির চালক সুধাংশু রাউতের। পুলিশের দাবি মতো টাকার পরিবর্তে ৫০-১০০ টাকা দিতে গেলে ওই পুলিশ কর্মীরা তা নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ মাছের গাড়ির চালক সুধাংশু রাউতের।
তারপরে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক পুলিশ আধিকারিক সহ পুলিশের গাড়ির চালক রণমূর্তি ধারণ করলে মাছের গাড়ির চালক বেগতিক বুঝে গাড়ির গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের গাড়িটিও মাছের গাড়ির পিছনে ধাওয়া করে বেনাচিতি মাছ বাজারে পৌঁছে পুলিশ কর্মীরা প্রকাশ্যে মাছের গাড়ির চালককে ধরে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। পুলিশের লাঠির ঘায়ে মাছের গাড়ির চালকের অন্ডকোষ মারাত্মক জখম হয় বলে অভিযোগ মাছ ব্যবসায়ীদের।
মাছের গাড়ির চালক পুলিশের মারে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে উত্তেজিত মাছ ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে পুলিশ কর্মীদের আটকে বেধড়ক গণপিটুনি দেয় বলে জানা গেছে। উত্তেজিত ব্যবসায়ীদের মারে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশের গাড়ির চালক গুরুতর আহত হয়। তাদের কাছ থেকে গোছা গোছা টাকা উদ্ধার হয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। খবর পেয়ে আহতদের প্রান্তিকা ফাঁড়ির পুলিশ উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানা গেছে। পরে স্থানীয় পুলিশ অবস্থার সামাল দেয়।
প্রহৃত পুলিশ কর্মীরা মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ডিভিসি মোড়ে মাছের গাড়িটি পুলিশের গাড়িকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে আসায় পুলিশ গাড়িটিকে ধরতে পিছনে ধাওয়া করেছিল। মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন যে ভোরবেলায় মাছের গাড়ি জাতীয় সড়ক ধরে বেনাচিতি সহ দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে আসে সেই সব মাছের গাড়িকে পুলিশ ধাওয়া করে রাতের অন্ধকারে মোটা অঙ্কের টাকা তোলা তোলে। মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারে জর্জরিত হয়েই আজ পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচারিতরা রুখে দাঁড়াল। মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, যে ভাবে মাছের গাড়ির চালককে পুলিশ তোলা না পেয়ে নির্মম ভাবে প্রকাশ্যে মেরেছে আমরা দোষী পুলিশ কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। দুই পক্ষের পরস্পর বিরোধী অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পদস্থ কর্মকর্তারা গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে বলে জানা গেছে।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?