স্থানীয় পুকুরে মা মনসা আছেন। তিনি বাড়িতে অধিষ্ঠিত হতে চান। স্বপ্নাদেশ বাস্তবে পরিণত হলে পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি হবে। এই নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন দুর্গাপুরের ৩৭ নং ওয়ার্ডের অর্জুনপুরের এক বাসিন্দা। একদিকে চলছে মনসা পুজো তার উপর স্বপ্নাদেশ, সেই স্বপ্নাদেশ বাস্তবায়িত হওয়ার আশায় এলাকায় উৎসবের আমেজ। আর স্বপ্নাদেশকে বাস্তবে রূপ দিতে এসেছেন সূদূর বোকারো থেকে লাল বস্ত্র পরিহিত এক তান্ত্রিক।
সূর্যাস্তের সময় সেই তান্ত্রিক পুকুরে নামলেন এবং এক ডুবে এক প্রকান্ড কেউটে সাপ নিয়ে উঠলেন। আর পুকুরের পাড়ে উলু ধ্বনি, মা মনসার জয়ধ্বনিতে মুখরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী তান্ত্রিকের নামেও জয়ধ্বনি দিতে দিতে মহিলারা তান্ত্রিকের পায়ের ধুলো মাথায় তুলে নিলেন। মঙ্গলবার এমনই কুসংস্কারের এক দৃশ্য দেখল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের অন্যতম শিল্প তালুক অর্জুনপুরের মানুষজন। বুজরুকির কায়দায় স্তম্ভিত বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ ও যুক্তিবাদী আন্দোলনের কর্মীরাও।
যদিও এই খবর চাউর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা বিজ্ঞান মনস্ক যুক্তিবাদী কর্মী তপন বাউরি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচারে নামেন। তপন বাউরি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচারে গিয়ে স্থানীয় মানুষজনদের জ্ঞানচক্ষু খুলে দিতে বোঝান কেউটে সাপ কখনও জলে থাকে না। কেউটে সাপ থাকে উইঢিপি বা ইন্দুরের গর্তে। মানুষের অন্ধবিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে তান্ত্রিক জলে নেমে হাতের কারসাজিতে কেউটে সাপ বের করে সকলের সামনে আনেন। এটা চমৎকার নয় এটা বুজরুকি। তপন বাউরি বলেন, ‘এই ভাবে বুজরুকি দেখিয়ে এই ধরণের তান্ত্রিকরা মানুষ কে ঠকিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়।’ এদিন তপন বাউরি একাই অর্জুনপুরের সঙ্গে সঙ্গে পুরষা, অঙ্গদপুর, জিতেন নগর, ডিটিপিএস কলোনির গোটা এলাকায় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচার চালান।