শিশুদের জ্বর সঙ্গে মুখ, হাত, পায়ে জল ফোস্কা সহ গায়ে বড় বড় ফুসকুড়ি। দুর্গাপুরে এই ধরণের সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়া শিশুদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দেখতে অনেকটা পক্সের মতো হলেও এটি পক্স বা হাম নয়। ডাক্তারি পরিভাষায় এই ধরনের রোগকে চিকিৎসকরা বলছেন শিশুদের ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ বলে জানা গেছে। তবে মারণ রোগ নয়, কিন্তু শিশুদের কাছে খুবই যন্ত্রনাদায়ক একটি রোগ। মূলত এই রোগটি কক্সাকি ভাইরাস এ১৬ দ্বারা সংক্রামিত হয়। রোগটি খুবই ছোঁয়াচে। কক্সাকি ভাইরাসে আক্রান্ত এক শিশুর মাধ্যমে অন্য শিশুদের মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।
চিকিৎসরা বলছেন, মূলত পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুরা এই ভাইরাস দ্বারা বেশি সংক্রমিত হয়। ভয়ের কিছু না থাকলেও আক্রান্ত শিশুদের শরীরে যন্ত্রণা হয় খুব। রোগ সারতে মোটামুটি দিন দশেক সময় লেগে যায়। এই ভাইরাস আক্রান্ত শিশুর হাতের তালু, পায়ের পাতার নীচে এবং উপরে ও মুখ গহ্বরের ভিতর গলা পর্যন্ত জল ফোস্কা এবং গায়ে ফুসকুড়ি বের হয়। খেতে এবং কথা বলতেও শিশুদের বেশ কষ্ট হয়। জানা গেছে, এবছর দুর্গাপুরে এই হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ আক্রান্তের সংখ্যা অন্যবারের তুলনায় বেশ বেশি। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসরা বলছেন, এই রোগ ছোঁয়াচে হওয়ায় আক্রান্ত শিশুদের স্কুলে না পাঠিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে এবং বাড়িতে রেখে সুস্থ হয়ে উঠা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
দুর্গাপুরের বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কোনার বলেন, ‘এটি ভাইরাসজনিত রোগ। কক্সাকি ভাইরাস এ১৬ এই হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের কারণ। এই রোগটি খুব ছোঁয়াচে তবে ভয়ের কিছু নেই। সাধারণত শিশুরাই আক্রান্ত হয় এই রোগে। হাত, পা, গলা ও মুখ গহ্বরের ভেতরে ঘা হয় বলে আক্রান্ত শিশু খাবার খেতে কষ্ট হয়। তবে সঠিক চিকিৎসা পেলে পাঁচ থেকে দশ দিনের মধ্যে শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।’ চিকিৎসক আশীষ কোনার বলেন, ‘রোগটি যেহেতু খুব ছোঁয়াচে তাই আমরা এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের কয়েকদিনের জন্য স্কুলে না পাঠিয়ে বাড়িতে রেখেই শিশুর পরিচর্যা করতে বলি।’ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আশীষ কোনারের মতো শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দুর্গাপুরে এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বেশ বেশি।