লকডাউনে যাত্রী বোঝাই দূরপাল্লার বাস দুর্গাপুরে এসে আটকে পড়েছে। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর অসহায় বাসযাত্রীদের পাশে দাঁড়ালো দুর্গাপুরের ট্রাফিক পুলিশ। অসহায় বাস যাত্রীদের হাতে পানীয় জলের বোতল এবং বিস্কুটের প্যাকেট তুলে দিল দুর্গাপুরের ট্রাফিক পুলিশ দিল।

জানা গেছে, শিলিগুড়ি থেকে আসানসোলগামী নাইট সার্ভিসের একটি বেসরকারি সংস্থার বাস আজ ভোরে বীরভূম জেলার কঙ্কালীতলার কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। প্রচন্ড বৃষ্টিতে রাস্তার মাটি ধসে যাওয়ায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় যাত্রীবোঝাই বাসটি। এরই মধ্যে আজ সকাল থেকেই শুরু হয় রাজ্যজুড়ে লকডাউন। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে চলা বাসটি দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে পৌঁছয় বেলা বারোটা নাগাদ। সেই সময় বাসে ছিলেন ৩ মহিলা সহ ২০ জন যাত্রী। একটানা ১৬ ঘণ্টার যাত্রার ধকল। তার উপর লকডাউনের কারণে রাস্তায় কোন দোকান খোলা না থাকায় বাসের যাত্রীরা ছিলেন ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত ও ক্ষুধার্ত।

দুর্গাপুর নগর নিগমের চৌমাথা মোড়ের কাছে ট্রাফিক সিগন্যালে বাসটিকে আটকাতেই ঘটনার কথা জানতে পারেন কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ বড়ুয়া। বিশ্বজিৎবাবু সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার কথা জানান ট্রাফিকের পদস্থ আধিকারিকদের। এরপরই আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে যাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় পানীয় জল এবং বিস্কুটের প্যাকেট। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তারক নাথ মল্লিক(ট্রাফিক ইনস্পেক্টর), বিজয় লাইক (অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর), অনিন্দ্য গোস্বামী ( অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর)। তারপর ট্রাফিক আইন অনুযায়ী বাসের পারমিট পরীক্ষা করার পর ছেড়ে দেওয়া হয় বাসটিকে।

দুর্গাপুরে ট্রাফিক পুলিশের এমন মানবিক মুখ দেখতে পেয়ে খুশি প্রকাশ করেন বাসের যাত্রী অসমের বাসিন্দা পেশায় সিআইএসএফ কর্মী দিলীপ রায় এবং আসানসোলের বাসিন্দা গৃহবধূ মালা মুখার্জী। বৃহস্পতিবার লকডাউন সফল করতে দুর্গাপুরের পুলিশ সকাল থেকেই কড়া নজরদারি চালিয়ে লকডাউন ভাঙার দায়ে বেশকিছু বেপরোয়া মানুষকে যেমন আটক করেছে তেমনই দূরপাল্লার বাসটির সমস্যার কথা জানতে পেরে বাস যাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ ফের প্রমাণ করল পুলিশ কাজ করছে মানুষের জন্যই।



Like Us On Facebook