এক মহিলাকে রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দিতে কাউন্সিলরের সই ও সিলমোহর নকল করা হয় বলে অভিযোগ। দুর্গাপুর পুরসভায় সেই আবেদন স্ক্রুটিনি চলার সময় ধরা পড়ে যায়। তাঁর সই নকল করা হয়েছে বলে দাবি করেন কাউন্সিলর। এরপরেই রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের পর্দা ফাঁস হয় দুর্গাপুরে। দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্থি বিষয়টির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, দুর্গাপুরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুস্মিতা ভূঁই-এর সই এবং সিলমোহর নকল করেন উৎপল রায় নামে এক ব্যক্তি।যিনি সিপিআইএমের প্রাক্তন কাউন্সিলরের আত্মসহায়ক ছিলেন বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। এলাকার পৌরমাতা সুস্মিতা ভূঁই জানান, ওয়ার্ড থেকে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য দুটি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল দুর্গাপুর নগর নিগমে। সেই দরখাস্তের স্ক্রুটিনি চলার সময় জাল সই এবং সিলমোহর নকল বলে ধরা পড়ে। জানা গেছে, আবেদনকারী সুস্মিতা দাস এবং দীপিকা দাসের প্রায় আট-দশ বছর আগে বিয়ে হয়ে গেছে। উৎপল রায় এই দুই মহিলাকে সামনে রেখে রুপশ্রী প্রকল্পের টাকা তুলে নিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করার জন্য ছক তৈরি করেন বলে অভিযোগ।
এদিকে, দুই সন্তানের মা পেশায় পরিচারিকা দীপিকা দাস বলেন, ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যাবে রূপশ্রী প্রকল্পের অন্তর্গত এমনটাই জানিয়েছিলেন সম্পর্কে পাড়ার মামা অভিযুক্ত উৎপল রায়। দীপিকা দাসের দাবি, রুপশ্রী প্রকল্পের প্রাপ্ত অর্থ থেকে ১৪ হাজার টাকা তাঁরা আমায় দেবে এবং বাকিটা উৎপল রায় নিয়ে নেবে এমন প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই আমরা এখন বুঝছি ওর প্রস্তাবে রাজি হয়ে ভুল কাজ করেছি। দীপিকা দাস বলেন, ‘স্বামী পেশায় সবজি বিক্রেতা, লকডাউনে সংসার চলে না। সেই সুযোগটাই নিয়েছে এই উৎপল রায়।’
অন্যদিকে, নিজের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে প্রতারক উৎপল রায়ের দাবি, সমাজসেবা করার উদ্দেশ্যেই রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা গরীব পরিবারটিকে পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। এর আগেও সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কাজ করেছি। তবে এর জন্য কোন অর্থ দাবি করিনি কখনও।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার ছক কষছে স্থানীয় যুবক এই খবরে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে আসল দোষীদের ধরার দাবি জানান তাঁরা।
দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়র দিলীপ অগস্থি বিষয়টির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে বলে জানা গেছে। স্থানীয় কাউন্সিলর সুস্মিতা ভূঁই বলেন, ‘আমার সই জাল করে এতবড় প্রতারণা আমিও এর তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এই প্রতারক কতদিন ধরে এই ভাবে সই জাল করে কারবার চালাচ্ছে তারও তদন্ত করে দেখার দাবি জানাচ্ছি আমি।’