পারিবারিক বিবাদের জেরে এক গৃহবধূ ১৮০ ফুট গভীর কয়লা খনির কুয়োতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় অসম সাহসী যুবকরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মহিলাকে কুয়ো থেকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেন। গ্রামবাসীরা ওই যুবকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে জামুড়িয়ার মাঝিপাড়া এলাকার এক গৃহবধূ পারিবারিক বিবাদের পর আত্মহত্যার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে দৌড়াতে শুরু করেন। তাঁকে আটকাতে পিছনে ছুটতে থাকেন কয়েকজন আত্মীয় স্বজন। কিন্তু মহিলাটি বিনা বাধায় ইসিএলের জামুড়িয়া কোলিয়ারির পরিত্যক্ত ৬নং পিটে ঝাঁপ দিতে সক্ষম হন। ওই সময় কুয়োর কাছে স্থানীয় খেলার মাঠে যুবকরা ক্রিকেট খেলছিলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন প্রথমে। ব্যাপারটা কী তা বোঝার জন্য তাঁরা ওই মহিলার আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁদের কাছ থেকে জানতে পারেন যে তাঁদের পরিবারের এক মহিলা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়েছেন। এই ঘটনা শোনার পর স্থানীয় যুবকরা কুয়োর কাছে গিয়ে দেখতে পান এক মহিলা কুয়োর ভিতর গাছের ডাল ধরে ঝুলছেন, মাথা ও হাত ছাড়া মহিলার বাকি শরীর জলে ডুবে আছে।
ওই যুবকরা তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন এবং পুলিশের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্ধার কাজে লেগে পড়েন। জোগাড় করেন দড়ি এবং বাঁশের মই। তারপর বাহাদুর কুড়ে নামে এক যুবক নিজের কোমড়ে দড়ি বেঁধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কুয়োয় নামেন। বাকি যুবকরা উপর থেকে দড়ি ধরে থাকেন। বাহাদুর মহিলার কাছাকাছি পৌঁছে একটা মই বাড়িয়ে দেন মহিলার দিকে। মহিলাটি মই বেয়ে বাহাদুরের কাছে এলে, উপরে দড়ি ধরে থাকা যুবকরা টেনে তোলেন বাহাদুর এবং ওই মহিলাকে। মাত্র ২০-২৫ মিনিটের মধ্যেই অসম সাহসী যুবকদের প্রচেষ্টায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। যুবকরা মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিলে পুলিশ তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসার পর তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়।