লকডাউনে সকলেই যখন পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার জোগাড় করতে দোকান-বাজারে লাইন দিচ্ছেন। তখন দুর্গাপুর রেলস্টেশনে জিআরপি থানায় কর্মরত পুলিশকর্মী তনুপ পাল শুধু নিজের পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী কিনতে দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন এমন নয়, ডগ লাভার তনুপ পাল লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই দুর্গাপুর রেলস্টেশনে প্রায় অনাহারে থাকা সারমেয়দের কথা চিন্তা করে প্রতিদিন সকালে বাজারে গিয়ে সারমেয়দের খাবার তৈরির সামগ্রী কিনে আনছেন।
একদিকে দুর্গাপুর রেলস্টেশনের জিআরপি থানায় কর্তব্য পালন। অপরদিকে প্রতিদিন সকালে উঠে স্টেশনের ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো সারমেয়দের জন্য খাবার জোগানের ব্যবস্থা করা। জানা গেছে, তনুপ পাল প্রতিদিন দুর্গাপুর রেলস্টেশনের ১৫ টি সারমেয়কে তিন বেলা খাবার দিচ্ছেন। সারমেয়দের খাওয়ার মেনু সকালে বিস্কুট, দুপুর ও রাতে মাংস-ভাত। নিজের হাতে বাজারে থেকে কখনও চিকেন, কখনও পাঁঠার মাংস কিনে আনেন তনুপবাবু। মুদি দোকান থেকে মসলা, চাল, ডাল, আলু সঙ্গে খাবার রান্নার জন্য নতুন বাসনপত্রও কিনেছেন বলে জানা গেছে।
এরপর নিজের হাতে খাবার রান্না করে খেতে দিচ্ছেন সারমেয়দের। যাতে খাবার নিয়ে নিজেরা অশান্তির সৃষ্টি না করে, সেই দিকেও করা নজর রাখেন। যেন রীতিমত সংসার পেতেছেন ভালোবাসার সারমেয়দের জন্য। জানা গেছে, পোস্টিং পেয়ে মার্চ মাসে দুর্গাপুর জিআরপি থানায় আসেন তনুপ পাল। এখানে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সারমেয়প্রেমী তনুপবাবুর বন্ধুত্ব হয়ে যায় স্টেশনের ভবঘুরে সারমেয়দের। তাদের নিয়মিত খাওয়ান তনুপবাবু। এর আগে কামারকুন্ডুতে ছিলেন। সেখানেও রেলস্টেশনের সারমেয়দের নিয়মিত খাবার দিতেন বলে জানা গেছে। লকডাউনের প্রথম দিনেই স্টেশনের ভবঘুরে সারমেয়দের খাবার না পাওয়ার দৃশ্য তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। তারপর থেকে তনুপবাবুর সৌজন্যে এক বেলাও আর অভুক্ত থাকেনি দুর্গাপুর রেলস্টেশনের সারমেয়রা।