মহারাষ্ট্রের হিঙ্গলঘাটের বাসিন্দা বছর তেত্রিশের প্রকাশ বেদি মায়ের মৃত্যুর পর শোক সামলাতে না পেরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে টেক্সটাইলের চাকরি, বাড়ি, আত্মীয় স্বজন ছেড়ে পথ ভুলে গত প্রায় তেরো মাস আগে ট্রেনে করে দুর্গাপুর স্টেশনে এসে নামেন। লোকে নাম জিজ্ঞাসা করলে প্রকাশ নিজের নামও ভুলে গিয়ে নিজেকে শ্যাম বলে পরিচয় দিতে থাকে। দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড তখন থেকেই প্রকাশের বাসস্থান হয়ে ওঠে।
কিন্তু স্থানীয় মানুষ প্রকাশের স্বভাব দেখে অনেকেই প্রকাশ যে ভালো বাড়ির ছেলে তা আর বুঝতে অসুবিধা হয়নি। স্থানীয় যুবক অমিত চক্রবর্তী, পরিতোষ প্রামাণিক, খোকন সাউ, রবীন্দ্রনাথ সাহারা প্রকাশের খাওয়া দাওয়া ও শোওয়ার বন্দোবস্ত করে দেন বাস স্ট্যান্ডেই। ওই যুবকদের মধ্যে ক্রমেই প্রকাশকে নিয়ে কৌতুহল জাগতে থাকে। একদিন প্রকাশকে কাগজ পেন দিয়ে বাড়ির ঠিকানা লিখতে বলা হয়। প্রকাশ মহারাষ্ট্রের হিঙ্গলঘাটের কথা সঙ্গে তিনটি মোবাইল নম্বর লিখে দেয় কাগজে। দুটি নম্বরে কাউকে না পাওয়া গেলেও একটি নম্বরে প্রকাশের এক আত্মীয়কে পাওয়া যায়। সেই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরেই স্থানীয় মানুষ প্রকাশের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দুর্গাপুরে শুক্রবার প্রকাশের এক আত্মীয় এলে তখনই জানা যায় শ্যাম নয় পথভোলা ওই যুবকের নাম প্রকাশ। শুক্রবার অমিত, পরিতোষ, খোকন, রবীন্দ্রনাথরা প্রকাশের চুল দাড়ি কাটিয়ে নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়ে পরিপাটি করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে প্রকাশের আত্মীয়ের হাতে তুলে দেন। এদিন প্রকাশ ফের নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায় আত্মীয়ের সঙ্গে।