দুর্গাপুরের ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট সোমনাথ অধিকারী তৈরি করলেন ‘কোভিড বিনাশিনী দুর্গা’। মেডিকেল অ্যাম্পুল দিয়ে তিনি আস্ত মা দুর্গা তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন নামকরা পুজো মণ্ডপে সোমনাথবাবুর হাতে তৈরি করা দেবী দুর্গা দর্শকদের মন কেড়েছে। প্রতিবছর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন নামি-দামি সার্বজনীন পুজায় মণ্ডপসজ্জা করে তাক লাগিয়ে দেন। তাঁর হাতে তৈরি ‘তাসের দেশ’, ‘বিবর্তন’, ‘ঘটে পটে দেবী দুর্গা’, ‘দশ অবতারের তাস’ সহ বিভিন্ন থিমের পুজো মণ্ডপ দেখতে লাখো-লাখো দর্শনার্থীর সমাগম হয়। জেলায় ‘স্বল্প বাজেটের পুজো’ হয়ে ওঠে কলকাতার ‘বিগ বাজেট পুজো’ কমিটি গুলোর সমতুল্য।
করোনা মহামারীর দাপটে এবার থিমের বড় বাজেটের পুজো বন্ধ। কিন্তু শিল্পী মন তো চায়, নতুন নতুন শিল্পের সৃষ্টি। কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার অফ ভিজ্যুয়াল আর্টস এ ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া শিল্পী সোমনাথ অধিকারী জানান, বিশ্বজুড়ে কোভিড মহামারীর কারণে এক দুর্যোগ তৈরি হয়েছে। তা শিল্পীর শিল্পকর্মের মধ্যে ধরে রাখাই ছিল আমার মূল উদ্দেশ্য। প্রায় ৯০০টি ভ্যাক্সিন অ্যাম্পুল দিয়ে ২ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২ফুট উচ্চতার প্রতিমা বানাতে সময় লেগেছে প্রায় তিন মাস। খরচা হয়েছে আনুমানিক দশ হাজার টাকা। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের তথ্য ও সাংস্কৃতিক বিভাগের তরফ থেকে মূল্যায়ণের জন্য বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে। অপেক্ষায় আছি সরকারি মান্যতার জন্য।
ইতিপূর্বে জার্মানি, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স সহ বিভিন্ন দেশে ভারতীয় সংস্কৃতির উপর ভিজ্যুয়াল আর্টস নিয়ে কর্মশালাতে অংশগ্রহণ করেছেন। চলতি বছর বিশ্বের একাধিক দেশের শিল্পীদের নিয়ে ইটালিতে কোভিডের উপর একটি চিত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন। তবে এবার নিজের পছন্দের বিষয় পেইন্টিং থেকে সরে উডেন পেইন্টিং এর উপর আলোকপাত করতে চান তিনি। তাই ২০২১ সালে মালয়েশিয়া এবং তুরস্কে আয়োজিত কর্মশালাতে ভারতীয় উডেন পেইন্টিং নিয়ে যেতে চান শিল্পী সোমনাথ অধিকারী।
শিল্পী সোমনাথ অধিকারী বলেন, ‘আমি প্রতিবছর পুজো মণ্ডপের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করি। এবার প্রথম আমি আমার মিজের জন্য ভ্যাক্সিন অ্যাম্পুল দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করলাম। সারা বিশ্ব কোভিড অতঙ্কে ভুগছে। কোভিড ভ্যাক্সিনের অপেক্ষায় রয়েছে গোটা বিশ্ব। তাই ভ্যাক্সিন অ্যাম্পুল দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি আমার কাছে এবার খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে তাই ভ্যাক্সিন অ্যাম্পুল দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছি।’ সোমনাথবাবু আরওবলেন, ‘এই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে দশ হাজার টাকার কিছু বেশি খরচ হয়েছে। তবে এখন দেখছি এই দুর্গা প্রতিমা বিভিন্ন সংস্থা তাদের মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে।’