পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই প্রথম করোনার জেরে কোনো হাসপাতালে জরুরী পরিষেবা ছাড়া সমস্ত কিছুই বন্ধ করে দেওয়া হল। এই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর হাসপাতালে। শুক্রবার জেলা প্রশাসন থেকে যে করোনা সংক্রান্ত বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কেবলমাত্র জামালপুর ব্লক জুড়েই একদিনে ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় এখনও পর্যন্ত গোটা জামালপুর ব্লকে ৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে খোদ জামালপুর হাসপাতালের ৯ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে গোটা ব্লক জুড়েই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার গোটা জামালপুর ব্লক জুড়েই লকডাউন লাগু করার জন্য জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের করোনা সংক্রান্ত বুলেটিনে গোটা জেলায় একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭জন। যার মধ্যে ৫ জনই জামালপুর ব্লকের। এছাড়াও বর্ধমান ১ ব্লকে ১জন, বর্ধমান পুর এলাকায় ১৪ জন, কালনা ১এর ২জন, কালনা ২ এর ৩ জন, কাটোয়া পুরসভা এলাকায় ১ জন, রায়না ২ এর ১৩ জন, মেমারি ১এর ৩ জন, মেমারি ২ এর ১জন, মেমারি পুর এলাকায় ২ জন, মন্তেশ্বরে ১ জন এবং পূর্বস্থলী ১ এর ১ জন। এদিকে, জামালপুর হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত মোট ৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১ জন, ৯ জন নার্সের মধ্যে ৩ জন এবং ৫ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর মধ্যে ২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও ১ জন ল্যাব অ্যাসিস্ট্যাণ্ট এবং ১ জন স্বাস্থ্যকর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর তার জেরেই শনিবার থেকে জামালপুর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের পরিষেবা ছাড়া বাকি সব পরিষেবাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, এব্যাপারে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার জানিয়েছেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, জামালপুর ব্লক জুড়েই যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে কিছুদিনের জন্য গোটা ব্লকেই লকডাউন করার জন্য তিনি জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অপরদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর হাসপাতালের এই সংক্রমণের ঘটনায় ইতিমধ্যেই দমকল বিভাগকে গোটা হাসপাতাল স্যানিটাইজ করার জন্য বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে গোটা হাসপাতালকেই স্যানিটাইজ করা হলে জরুরী পরিষেবাও ২ দিন বন্ধ থাকতে পারে।

Like Us On Facebook