স্বামী শয্যাশায়ী, অচল সংসারের হাল ধরতে এক সময় টোটো চালাতেন দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার বাসিন্দা লক্ষী দে দত্ত। বার বার সেই টোটোর রিপেয়ারিং খরচ জোগাতে নাজেহাল অবস্থা হতো লক্ষীদেবীর। তারউপর টোটোর সরকারি স্বীকৃতি নেই। টোটোর ভবিষ্যতও অনিশ্চিত। তাই লক্ষী দে দত্তের দুরবস্থার কথা জেনে দুর্গাপুর মহাকুমা প্রশাসন লক্ষী দে দত্তের রুজি রোজগারের নিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়তে তাঁর হাতে সরকার স্বীকৃত ই-রিক্সা তুলে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
জানা গেছে, দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলের উদ্যোগে দুর্গাপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের মুখ্য আধিকারিক মৃণাল দত্তের আন্তরিক প্রচেষ্টায় জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি দুর্গাপুরের প্রথম মহিলা টোটো চালকের হাতে ই-রিক্সা তুলে দেওয়ার প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালে ই-রিক্সার চাবি লক্ষীদেবীর হাতে তুলে দিলেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে। বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার মাঝের মোড়ের বাসিন্দা লক্ষীদেবীকে ই-রিক্সা তুলে দিতে মহকুমা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন দুর্গাপুরের আঞ্চলিক মুখ্য পরিবহণ আধিকারিক মৃনাল দত্তের উপস্থিতিতে লক্ষীদেবীরর হাতে ই-রিক্সার চাবি এবং প্রয়োজনীয় রুট পারমিট সহ সরকারি কাগজপত্র তুলে দেন মহকুমাশাসক।
জানা গেছে, লক্ষীদেবীকে সগড়ভাঙার মাঝের মোড় থেকে দুর্গাপুর স্টেশন-রায়ডাঙা হয়ে নডিহা পর্যন্ত ই-রিক্সা চালানোর রুট পারমিট দিয়েছে দুর্গাপুর আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি দুর্গাপুর মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে এবং দুর্গাপুর আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিক মৃনাল দত্ত যেভাবে লক্ষীদেবীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে লক্ষীদেবী অভিভূত। তিনি জেলাশাসক থেকে মহাকুমাশাসক এবং পরিবহণ আধিকারিককে কৃতজ্ঞতা জানান। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘লক্ষীদেবীর হাতে ই-রিক্সা চালানোর চাবি তুলে দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। উনি সম্মানের সঙ্গে রোজগার করে অচল সংসারের হাল ধরতে পারবেন।’ দুর্গাপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের মুখ্য আধিকারিক মৃণাল দত্ত বলেন, ‘আমরা লক্ষীদেবীর বিষয়ে বিশদ ভাবে জানতে পেরে তৎপরতার সঙ্গে ই-রিক্সা চালানোর প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেওয়ার প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিই। খুব ভালো লাগছে আজ মাননীয় মহকুমাশাসক লক্ষীদেবীর হাতে চাবি এবং সুনির্দিষ্ট একটি রুটের কাগজপত্র তুলে দিলেন। সম্মানের সঙ্গে লক্ষীদেবী ই-রিক্সা চালিয়ে আবার নিজের সংসারের জন্য রুজি-রোজগার করবেন।’