বরাকর নদীর উপর দূষণ সমীক্ষা চালিয়ে আমেরিকার কেন্টাকি জয় করল দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পাঁচ পড়ুয়া। সম্প্রতি কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেটের ফান্ডিংয়ে এক্সপ্লোরিং ওয়াটার কোয়ালিটি ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া অ্যান্ড কেন্টাকি বা পূর্ব ভারত ও কেন্টাকিতে জলের মান শীর্ষক এক পরিবেশ সচেতনতার প্রজেক্টে অংশ নিয়েছিল ভারত ও আমেরিকার ১৯ টি স্কুল। এই স্কুলগুলির মধ্যে দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের পাঁচ পড়ুয়ার বরাকর নদীর দূষণ নিয়ে সমীক্ষা সকলের নজর কাড়ে। অন্য সব স্কুলকে পিছনে ফেলে দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুল ও কেন্টাকির বেলফ্রি স্কুল এই প্রজেক্টে যুগ্ম বিজয়ী হয়।
বরাকর নদীর জলে স্থানীয় মানুষ স্নান করেন আবার নির্ভয়ে পানও করেন, গবাদিপশু স্নান করানো হয়, আশপাশের প্রচুর নোংরা আবর্জনা ফেলা হয়, ধর্মীয় রীতি মেনে স্থানীয় মানুষ পুজোর প্রতিমা বরাকর নদীতে বিসর্জন দেন। নদীর তীরে থাকা শ্মশান থেকেও দূষণ ছড়ায় এই নদীতে। কয়লা খনির কার্বন মনোক্সাইড ও কার্বন ডাই অক্সাইড বরাকর নদীর জলে মেশে। তা সত্বেও এই নদীর জলে দূষণের মাত্রা সহনসীমার মধ্যেই রয়েছে বলে ছাত্রদের সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
ডিএভির পাঁচ পড়ুয়ার কাছে বরাকর নদীর উপর দূষণ সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট জমা করা বেশ কঠিন কাজ ছিল। বরাকর নদীর উপর দূষণ সমীক্ষা চালানোর পাশাপাশি পাঁচ পড়ুয়া তাদের সতীর্থদের নিয়ে বরাকর নদীর জলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় মানুষকে সচেতন করার প্রচেষ্টা চালায়। আবৃত্তি, মুকাভিনয়, প্ল্যাকার্ড ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। যা অন্যান্যদের পিছনে ফেলে দিয়ে বিশেষজ্ঞদের নজর কাড়ে এই পাঁচ পড়ুয়া।
দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল সকুলের পাঁচ পড়ুয়া হল অনিকেত নন্দী, শুভদীপ নন্দী, সায়ন মন্ডল, সাইমন সরকার ও সৌমিত দাস। কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেটের উদ্যোগে নেওয়া এই প্রজেক্টে সেরার স্থান দখল করার পর ডিএভির পাঁচ পড়ুয়া কেন্টাকির সাউথইস্ট জিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ আমেরিকায় তাদের সফল প্রজেক্ট নিয়ে প্রেজেন্টেশনও দেয় এবং ২১ জুন কলকাতার মার্কিন সেন্টারে মার্কিন কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে অনিকেত, শুভদীপ, সাইমনদের শংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করা হয়। অনিকেত, শুভদীপদের কৃতিত্বে যেমন দুর্গাপুর সহ ডিএভি স্কুলে খুশির হাওয়া তেমনই বরাকর নদীর জলের দূষণ মাত্রা সহনসীমার মধ্যেই রয়েছে এই খবরে বরাকর বাসীরাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।