ডিভিসির ছাড়া জলে বর্ধমানের রায়না-২ নং ব্লকের অধীন এবং বর্ধমান ও হুগলীর সীমান্তবর্তী মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভেঙে বৃহস্পতিবার মাঝ রাত থেকে প্লাবিত হয়ে গেল প্রায় ২০-২২ টি গ্রাম। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বুধবারই জামালপুর তথা হুগলীর সীমান্তবর্তী নিশ্চিন্দপুর এলাকায় দামোদরের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল ৫টি গ্রাম।

বৃহস্পতিবার রায়না-২ ব্লকের বড়বৈনান, ছোটবৈনান, পাষণ্ডা, নরসিংহপুর, সুবলদহ প্রভৃতি গ্রামের রাস্তা ও কৃষিজমি প্রায় ৫ থেকে ৬ ফুট জলের তলায় চলে গেছে। এদিন দুপুর পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনো উদ্ধারের কাজ শুরু না হলেও রায়নার তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘড়ুইয়ের উদ্যোগে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা প্রায় ১০টি বড় নৌকা ও ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে উদ্ধারের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গ্রামবাসীরা নদীর ওপর দিয়ে দড়ি বেঁধেও উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছেন। কার্যত তাঁদের উদ্যোগেই এদিন এক মহিলাকে জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া থেকে উদ্ধার করেছেন তাঁরা।

বড়বৈনান গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের স্থানীয় বড়বৈনান বালিকা বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করা হলেও সেখানে খাবার দাবার, ওষুধ এবং জায়গার অপ্রতুলতা নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী প্রতিমা রায়, বর্ষা রায় প্রমুখরা। মুণ্ডেশ্বরীর এই বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার ঘটনায় রীতিমত ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও। তাঁরাও জানিয়েছেন, বারবার প্রশাসনের কাছে বাঁধ মেরামতির কথা বলা হলেও বাঁধ মেরামত করা হয়নি। ফলে কার্যত প্রতিবছরই তাঁদের বন্যা কবলিত হতে হচ্ছে।

প্রায় ফুট চারেক জলের তলায় এখন বড়বৈনান ইউএসকেএস শিক্ষা নিকেতন, বড়বৈনান গ্রাম পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রও জলমগ্ন। জলের তোড়ে যেকোনো মুহুর্তে ভাঙতে পারে রায়না ও নরসিংহপুর গ্রামে যাওয়ার মূল সড়কের ওপরে থাকা ব্রীজ। রায়না ব্লক কৃষি অধিকর্তা দীপঙ্কর পাল জানিয়েছেন, প্রায় ৩০০ একর ধানের জমি এবং প্রায় ১৫০ একর পটল, ঝিঙে, লঙ্কা সহ সব্জী নষ্ট হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

Like Us On Facebook