নীল-সাদা রঙের ছোঁয়া এবার রাস্তাতেও! তপ্ত পীচ গলানো কালো রাস্তা, লাল ধুলোয় চোখ-মুখ ভরে যাওয়া গ্রাম্য মোরাম রাস্তা কিংবা হালের ঢালাই রাস্তা এসব এখন যেন অতীত। ওইসব রাস্তাকে সরিয়ে জায়গা করে নিতে চলেছে বিটুমিনের সাথে বিশেষ পদ্ধতিতে অব্যবহৃত প্লাস্টিক মেশানো নীল-সাদা রাস্তা বা নীল রাস্তা! পরিবেশ বান্ধব, সাশ্রয়ী ও টেকসই তাই রাজ্যের মধ্যে প্রথম পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে পরীক্ষামূলকভাবে এই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, ফল ভাল হলে আস্তে আস্তে তা জেলার অন্যান্য প্রান্তেও তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধিপতি তথা রায়নার বিধায়ক শম্পা ধাড়া।

ইতিমধ্যেই নীল-সাদা রাস্তা ঘিরে কৌতুহল তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেও। নীল-সাদা রাস্তার কথা চাউর হতেই দূরদুরান্ত থেকে মানুষজন আসছেন নিজের চোখে রাস্তাটি দেখতে। তবে নতুনত্বের কথা স্বীকার করে নিয়েও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তা টেকসই হবে কিনা তা তো সময় বলবে তবে বাস্তবে বৃষ্টি হলে বা হঠাৎ করে ব্রেক কষলে পিছল কাটছে, তাই দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনাও থাকছে।

শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার জন্য আমরা বর্জ্য সামলানোর নানা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। অল ইন্ডিয়া রোড অ্যাসোসিয়েশন রাস্তার উপর নানা রকম গবেষণা করে। তাদের প্রযুক্তি, গরম পিচে যদি ১০ শতাংশ অবধি অযোগ্য প্লাস্টিক দেওয়া হয়, এর কোনও বিক্রিয়া হয় না। গরম পিচে ১০ শতাংশ প্লাস্টিক মিশিয়ে দিলে রাস্তাটি সাধারণত ঠান্ডা থাকে। হাঁটার জন্য উপযুক্ত হয়। জলে এই পিচ ক্ষয় অনেক কম হয়। প্রচণ্ড গরমেও এর কোনও ক্ষতি হয় না। রাস্তার পিচ সাধারণত জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে জলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাটা অনেকাংশে কমে যায়। তার ফলে রাস্তা টেকসই হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ব্যবহারের যোগ্য থাকে। খালি পায়ে হাঁটার পক্ষেও অনেক বেশি আরামদায়ক হবে এই রাস্তা। সাধারণ পিচের রাস্তায় গরমে খালি পায়ে হাঁটা কষ্টকর হয়ে ওঠে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এই রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটা যাবে।

তিনি আরও বলেন, রাজ্যের মধ্যে প্রথম এই প্রযুক্তি দিয়ে আমরা রাস্তা করতে পেরেছি। এই রাস্তাটি যেহেতু নীল রঙের দেখতে, তাই একে ‘নীল রাস্তা’ বলা হচ্ছে। সাধারণত প্রচণ্ড গরমেও এই রাস্তাটি ঠান্ডা থাকে। তাই মূলত গরমের দেশগুলিতে এই ধরণের রাস্তা তৈরি হয়ে থাকে। দুবাইয়ে এই প্রযুক্তি দেখা যায়। এবং ভারতবর্ষের আবহাওয়ায় এটা পরীক্ষিত হয়েছে। অল ইন্ডিয়া রোডস অ্যাসোসিয়েশনের ইঞ্জিনিয়াররা আমাদের কাছে এই প্রযুক্তি উপহার দিয়েছেন। তাঁরা বলার পরেই এটা নিয়ে আলোচনা হয়। তার পরই আমরা প্রথম রায়নায় এই নীল রাস্তাকে রূপায়িত করলাম।

Like Us On Facebook